প্রসেনজিত্ মালাকার: "শাসক দলের মদতে আরজি করের সমস্ত প্রমাণ লোপাটের মূলে সন্দীপ ঘোষ"। বোলপুরে মিছিল করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সর্বভারতীয় ফেডারেশন গভর্নমেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি আরও বলেন, "অভিযুক্তদের আড়াল করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চলছে, কলকাতা পুলিশ ব্যর্থ।" আরজি করের প্রতিবাদে শনিবার বোলপুর শহরজুড়ে বাম মনস্ক মানুষজন মিছিল করেন। সেই মিছিলে হাঁটলেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পরে জানা যায়, তাঁকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। প্রতিবাদে সরব হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিল্পী, সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। নজর রাখছে দেশের শীর্ষ আদালতও।
এদিন বোলপুরে বাম মনস্ক মানুষজন একটি প্রতিবাদী মিছিলের আয়োজন করেন। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সেই মিছিল শুরু হয়। মিছিলে অংশ নেন সর্বভারতীয় ফেডারেশন গভর্নমেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী, যিনি প্রথম থেকেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সুবর্ণবাবুর বাড়ি বোলপুরের সিঙ্গি গ্রামে। এখানেই তিনি ছোট থেকে বড় হয়েছেন।
তিনি বলেন, "অভিযুক্তদের আড়াল করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চলছে। ঘটনার পর ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছিল যে, আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। ডাকার পর তাদের তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল, মৃতদেহ দেখতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।"
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী আরও বলেন, "সন্দীপ ঘোষ এবং তার অনুসারীরা, আর শাসক দলের কিছু নেতা মিলে শলাপরামর্শ করছিলেন কিভাবে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়া যায়। প্রমাণ লোপাটের জন্য নানান ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে। নিজেদের অনুগামীদের দিয়ে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যাতে রিপোর্টেও গড়মিল করা যায়। তাই ভুলে ভরা ফরেন্সিক রিপোর্ট বেরিয়ে এসেছে। কোনো নিয়ম মানা হয়নি, একের পর এক বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে।"
সুবর্ণবাবু আরও বলেন, "সংস্কারের নামে ঘটনাস্থল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৪ তারিখ রাতে যখন মহিলারা রাস্তায় নেমে মিছিল করছিলেন, তখন ৩০ থেকে ৪০ জন গুণ্ডা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সশস্ত্র গুণ্ডাদের দিয়ে সমস্ত প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়। এই সমস্ত কিছুতেই সন্দীপ ঘোষ জড়িত। কলকাতা পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। সিবিআইয়ের কাছে আমাদের দাবি, প্রকৃত দোষীদের ধরতে হবে এবং প্রমাণ লোপাটকারীদেরও ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।"