আর জি কর থেকে শিক্ষা! পুরুলিয়ায় রাতের হাসপাতাল টহলে মহিলাদের ‘উইনার্স টিম’
প্রতিদিন | ২৫ আগস্ট ২০২৪
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: আর জি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনা থেকে শিক্ষাগ্রহণ। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। রাতের চেহারা কেমন? তা ঘুরে দেখে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের অভয় দিচ্ছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের ‘উইনার্স টিম’। মহিলা পুলিশের এই টিম পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সেবিকাদের সঙ্গে কথা বলে সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় পুরুলিয়া জেলা পুলিশের অ্যাপ ‘সহায়’-এর কার্যকারিতা বোঝাচ্ছেন স্বয়ং ডিএসপি। শুক্রবার রাতে এমন ছবিই দেখা গেল দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজে।
রাতে টহলে বেরিয়ে পুরুলিয়া (Purulia) জেলা পুলিশের ডিএসপি (শৃঙ্খলা ও প্রশিক্ষণ) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত নিজে হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের সঙ্গে কথা বললেন। জিজ্ঞাসা করলেন, তাঁদের মোবাইলে ‘সহায়’ অ্যাপ (App) ডাউনলোড আছে কিনা? না থাকলে তিনি নিজেই সেই অ্যাপ নার্সদের মোবাইলে ডাউনলোড করে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, কীভাবে মিলবে সুরক্ষা? তাঁর তত্ত্বাবধানে রীতিমত পাঠ দিচ্ছে ‘উইনার্স টিম’। এনিয়ে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার (SP) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুধু উইনার্স টিম নয়। সাধারণ থানায় থাকা মহিলা পুলিশ, মহিলা থানায় থাকা পুলিশরাও আরও বেশি করে টহল দিচ্ছে। সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াচ্ছে। দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দুটি ক্যাম্পাসে যেখানে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে, সেগুলিকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।”
এছাড়া মধ্যরাতে মহিলারা যাতে স্বচ্ছন্দে নিজের কর্মস্থলে নিরাপদে ডিউটি (Night Duty) করতে পারেন, নিজের খেয়ালখুশি মতো ঘুরতে পারেন, তাই স্কুটি, মোটরবাইক, এমনকি হাঁটা পথে শহর থেকে গ্রামে টহল (Patrolling) দিচ্ছে এই টিম। প্রায় ৩ সেকশন অর্থাৎ ২৪ জন দক্ষ মহিলাকে নিয়ে এই টিম তৈরি করেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এই টিম মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় সমগ্র জেলা জুড়ে কাজ করছে।
জঙ্গলমহলের এই জেলায় মহিলাদের উপর ইভটিজিং বা যে-কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কয়েক বছর আগে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ মহিলা পুলিশদের নিয়ে এই ‘উইনার্স টিম’ গঠন করে। সারা বছর পুলিশের এই বিশেষ টিম কাজ করলেও সম্প্রতি আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital) কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই টিম আরও সক্রিয়। পুরুলিয়া শহরের আনাচে-কানাচে গলি থেকে রাজপথ। এমনকি জেলার গ্রামেগঞ্জেও এখন এই টিম ঘুরছে।
ওই মহিলা পুলিশের টিমের বার্তা, নিজের মোবাইলে ‘সহায়’ ইনস্টল করা থাকলে যে কোনও সময় যে কোনও বিপদে এই অ্যাপের এসওস (SOS) বটন টিপলে মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের মোবাইল বা টহলদারি ভ্যান উপস্থিত হয়ে যাবে। মুহূর্তেই হবে মুশকিল আসান।