‘সঞ্জয় যেন ধনঞ্জয় না হয়’, RG Kar কাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সতর্ক করলেন কারামন্ত্রী
প্রতিদিন | ২৫ আগস্ট ২০২৪
নন্দন দত্ত ও দেব গোস্বামী: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। কিন্তু এতদিনেও সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে বিস্তর। আর তাতেই সতর্ক করলেন রাজ্যে নতু দায়িত্বপ্রাপ্ত কারামন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা (Chandranath Sinha)। শুক্রবার সাংবাদিকদের সামনে এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘‘সঞ্জয় যেন ধনঞ্জয় না হয়! কারণ, তার মৃত্যুর ২০ বছর পর এখন অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে, ধনঞ্জয় ততটা দোষী ছিলেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়েছে। কিন্তু তাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলতে হয়েছিল।’’ চন্দ্রনাথ সিনহার বক্তব্য জানান, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সহমত। এই ঘটনার প্রকৃত দোষীদের উপযুক্ত ও দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা হোক। সঞ্জয় একাই প্রকৃত দোষী কিনা, নাকি তার পিছনে আরও কেউ আছে, তা জানতে হবে। প্রকৃত ঘটনা সামনে আসুক।’’
যদিও জেলার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) তথা কারামন্ত্রীর এই কথায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলা জুড়ে। সিউড়িতে আর জি কর কাণ্ড (RG Kar Hospital) ও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে দু দিনের অবস্থান করে বিজেপি। সেখান থেকে বীরভূম জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যের কারামন্ত্রীও বুঝতে পারছেন, সঞ্জয়কে ধনঞ্জয় করার পরিকল্পনা মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন। কারামন্ত্রীর শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘পরিকল্পনা মাফিক সঞ্জয়কে ধনঞ্জয় বানিয়ে সন্দীপদের এনজয় করার সুযোগ করে দেওয়া তৃণমূলের লক্ষ্য।’’
বিজেপির (BJP) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারামন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে। তার মানে ধনঞ্জয়ের মতন সঞ্জয়কেও ‘ক্ষুদিরাম’ বানানোর পরিকল্পনা হয়তো কারামন্ত্রী নিজেই করতে চাইছেন।’’ বাম আমলে ঘটে যাওয়া ধনঞ্জয়ের ফাঁসির ঘটনায় সতর্ক বিজেপি। জগন্নাথবাবুর দাবি, ‘‘কারাবাসের সময়ে যদি সঞ্জয় রায়ের আরও বড় ধরনের কিছু বিপদ ঘটে যায়, তা আরও বড় ধরনের বিপর্যয় হবে। কারণ, আর জি কর কাণ্ডের পর যেভাবে রাজ্য সরকার তথ্য প্রমাণ লোপাটের খেলায় নেমেছেন তাতে বড় ষড়যন্ত্র আছে। হয়তো আবেদন জানাতে হবে এই রাজ্যে কারাবাসে সঞ্জয় রায়ের সুরক্ষা নেই। এই ঘটনার সত্যাসত্য জানতে সঞ্জয়কে বেঁচে থাকতে হবে।’’
তবে বিজেপি-সহ বিরোধীদের এই অপপ্রচার ও চক্রান্তের জন্য নিজেদের এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের জনসম্পর্ক বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন চন্দ্রনাথ সিনহা। তাঁর কথায়, ‘‘বিরোধীরা যে নোংরামি করছে, যে মিথ্যা প্রচার করছে তার পালটা প্রচার করতে হবে। যা ঘটেছে, তাকে কেউ সমর্থন করি না। কোনও আসামি যেন পালিয়ে না যায়, সেটা আমাদের দেখতে হবে। কিন্তু তাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে অরাজকতা তৈরির সব প্রচেষ্টা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’’