• সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় খুন হন নান্দুরের যুবতী, জেরায় স্বীকার ধৃতের
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: চার বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নান্দুরের যুবতী প্রিয়াঙ্কা হাঁসদার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার অজয় টুডুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। প্রথমে বন্ধুত্ব। পরে তা প্রণয়ের দিকে এগয়। দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে থাকায় সম্পর্ক গভীর হয়। পুলিসের দাবি, উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা জানতে পারেন, অজয়ের সঙ্গে আরও অনেক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। সেটা জানার পরই প্রিয়াঙ্কা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান। কিন্তু অজয় সম্পর্ক রাখার জন্য চাপ দিতে থাকে। তাতে রাজি না হওয়ায় প্রিয়াঙ্কাকে সে খুন করে বলে পুলিসের দাবি। পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। সে খুনের কথা স্বীকার করেছে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নান্দুরের ওই যুবতী গত ১২ আগস্ট বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরেন। ওই ট্রেনেই অজয় হাওড়া এসেছিল। দু’দিন সে হাওড়া সংলগ্ন এলাকায় কাটিয়ে ১৪তারিখ বর্ধমানে চলে আসে। ওইদিন দুপুরে নান্দুরের কাছে একটি জায়গায় ওই যুবতী তার সঙ্গে দেখা করে। তিনি বাড়ি থেকে সাইকেল চালিয়ে সেখানে যান। পুলিস সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই জায়গায় তাঁদের দু’জনের ছবি পেয়েছে। দুপুরে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। কিছুক্ষণ পর ওই যুবতী বাড়ি ফিরে যান। তিনি ভেবেছিলেন, অজয় ফিরে গিয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে অজয় তাঁকে ফের দেখা করার জন্য ফোন করে। প্রথমে তিনি রাজি হননি। বারবার ফোন করায় তিনি সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে  যান। সেখানে অজয় অপেক্ষা করছিল। উভয়ের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা হয়। তারপর আচমকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর গলার নলি অজয় কেটে দেয়। যদিও পুলিস ছুরি বা অস্ত্রটি উদ্ধার করতে পারেনি। 

    পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, খুন করার পর অজয় ট্রেন ধরে হাওড়া চলে যায়। তারপর থেকে তাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। দু’দিন পর তার ফোনের লোকেশন খড়্গপুরে পাওয়া যায়। সেখানে পুলিসের একটি টিম পৌঁছয়। কিন্তু ফের মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিস আধিকারিকরা ফিরে আসেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, সে পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে। ঘনঘন অবস্থান বদল করতে থাকে। অবশেষে শুক্রবার রাতে তাকে পাঁশকুড়ার হাউরের কাছে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিস সুপার বলেন, দুষ্কৃতীকে ধরতে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম পুলিস সহযোগিতা করেছিল। পুলিসের একটি দল বেঙ্গালুরু পৌঁছেছিল। সেরাজ্যের পুলিসও সহযোগিতা করছে। দুষ্কৃতী খুনের পর জামা-প্যান্ট বদল করে ফেলে। তাকে হেফাজতে নিয়ে সেগুলি উদ্ধার করা হবে। বিচারক তাকে ১০দিন পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)