• আচমকা অভিযানে উদ্ধার বিপুল চোরাই কাঠ, বাজেয়াপ্ত মেশিন
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: বর্ষাকালেই নির্বিচারে চলছে বৃক্ষছেদন। কেটে ফেলা বড় বড় গাছের গুড়ি চেরাইয়ের জন্য জমা হচ্ছে কাঠমিলে। শুক্রবার রাতে অতর্কিতে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কাঠমিল থেকেই বিপুল পরিমাণ কাঠ বাজেয়াপ্ত করল বনদপ্তর। ৪৮টি মোটা গাছের গুড়ির কোনও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি মিল মালিক রাজেশ ভান্ডারি। শুধু কাঠ উদ্ধারই নয়, বনদপ্তরের অভিযানে ধরা পড়েছে আরও একটি বড় বেনিয়ম। এই কাঠমিলের সেকেন্ডারি লাইসেন্স রয়েছে। গোলাকার গাছের গুড়ি চেরাই করার জন্য যে হরাইজেন্টাল ট্রে মেশিন তা সেখানে থাকার কথা নয়। অথচ সেখানেই পাওয়া গিয়েছে এই দামি মেশিন।  বনপ্তরের দাবি, দপ্তরকে অন্ধকারে রেখে, চোরাই কাঠ কিনে চেরাই করতেন কাঠমিল মালিক। তাঁর মেশিনটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে বনদপ্তর। ডিএফও অনুপম খান বলেন, বিপুল পরিমাণ কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বর্ষাকালে গাছ কাটা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও গোপনে গাছ কাটা হয়েছে বলেই কাঠ উদ্ধার হচ্ছে। অনুমতি না থাকায় আমরা শ’ মিলের হরাইজেন্টাল কাঠচেরাই মেশিনটিও বা‌঩জেয়াপ্ত করেছি। 

    কাঠ মিল মালিক রাজেশ ভাণ্ডারি বলেন, শুক্রবার রাতে যখন তাঁরা হানা দিয়েছিল আমি কাঠের কাগজপত্র দেখাতে পারিনি। এখন কাগজ পেয়ে গিয়েছি। তা বনদপ্তরকে দেখাব। হরাইজন্টাল কাঠ চেরাই মেশিন কেনা থাকলেও তা চালানো হয় না। 

    জামুড়িয়ার কুয়া মোড়ে রয়েছে শিবম শ’ মিল। যথেষ্ট বড় মিল এটি। বিপুল এলাকাজুড়ে মিল। মজুত রয়েছে মোটা মোটা গাছের গুড়ি। শিশু, শিরিষ সহ নানা কাঠ রয়েছে। শনিবার সকালে সেখানেই পুলিস বনদপ্তরের কর্মী আধিকারিকে ছয়লাপ। অভিযানে দেখা যায়, অনুমতি না নিয়েই প্রয়োজনীয় জেনারেল লাইসেন্স না করিয়ে তিনি বসিয়ে নিয়েছেন হরাইজন্টাল চেরাই মেশিন। বনদপ্তরের অভিযোগ, তা দিয়েই দিনরাত চোরাই কাঠ চেরাই হত। বনদপ্তরের দাবি, ১০ ঘনমিটার কাঠ বা‌঩জেয়াপ্ত করা হয়েছে। যা যথেষ্ট বেশি পরিমাণ। যদিও কাঠ বাজেয়াপ্ত করার পর সেই কাঠ সেই মিল মালিকের জিম্মাতেই দিয়ে যায় বনদপ্তর। বিড়ালকেই মাছ পাহারা দিতে কেন দিল বনদপ্তর? আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই বিপুল কাঠ উদ্ধার করে আনতে গেলে যে বিপুল পরিকাঠামো প্রয়োজন তা ছিল না। পাশাপাশি এলাকার আইনশৃঙ্খলার বিষয় মাথায় রেখেই এই ঩সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পরবর্তী কালে বাজেয়াপ্ত করা কাঠগুলি উদ্ধার করে আনা হবে। তবে শুধু জামুড়িয়া নয়, বারাবনি, সালানপুর, কুলটি এলাকাতেও নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগ উঠছে। বর্ষাকালে যেহেতু বনদপ্তর গাছ কাটার অনুমতি দেয় না তাই কাঠের দাম বাড়ে। সেই বাজার ধরতে মরিয়া শিল্পাঞ্চলের কাঠ পাচারকারিরা। জানা গিয়েছে, দোমোহনি, গৌরান্ডি এলাকায় যে অবৈধ মিলগুলিকে বন্ধ করেছিল বনদপ্তর তাও চালু হয়ে গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)