• সংখ্যালঘু দপ্তরের পাকাবাড়ি প্রাপকের তালিকায় আবাসের উপভোক্তারাই, তীব্র চাঞ্চল্য নন্দীগ্রামে 
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া উপভোক্তাদের নাম ফের সরকারি পাকাবাড়ি পাওয়ার তালিকায়! আর এনিয়েই নন্দীগ্রাম-১ব্লকে হইচই পড়ে গিয়েছে। এরকম একগুচ্ছ ঘটনা সামনে আসার পরই বিডিও অফিসে অভিযোগ জমা পড়েছে। মহম্মদপুর, সামসাবাদ সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে। তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি, পার্টির হোলটাইমাররা আছেন। অবিলম্বে ওই তালিকা সংশোধন করার দাবি উঠছে। নন্দীগ্রাম-১ বিডিও সৌমেন বণিক বলেন, তালিকা ধরে প্রতিটি বাড়ি ভিজিট হবে। আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়া কেউই সংখ্যালঘু দপ্তরের আর্থিক খরচে পাকাবাড়ি পাবেন না। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের পর ওই তালিকা সংশোধন হবে।

    বিধবা সংখ্যালঘু মহিলাদের পাকাবাড়ি তৈরির জন্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর ১লক্ষ ২০হাজার টাকা দেয়। এজন্য আগেই বিডিও অফিসে আবেদন জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতে প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়। নন্দীগ্রাম-১ব্লকে এরকম ৪২৩জনের নাম এসেছে। তাঁদের বাড়ি বাড়ি সার্ভে করার পর চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে। প্রাথমিক তালিকায় অনেক ভূতুড়ে উপভোক্তা আছে বলে অভিযোগ। ওই তালিকায় মহম্মদপুরের তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ মুসিয়ার রহমানের মা মেসিরন বিবির নাম আছে। অথচ, মেসিরনের স্বামী শেখ আব্দুল জব্বার আগেই আবাস যোজনায় ১লক্ষ ২০হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তাঁদের পাকাবাড়ি আছে। তারপরও সংখ্যালঘু দপ্তরের পাকাবাড়ি প্রাপকের তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের ওই বুথ সভাপতির মায়ের নাম রয়েছে।

    মহম্মদপুর গ্রামের সুফিয়ান খান এবং শেখ আলিমুদ্দিন আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছিলেন। তা দিয়ে পাকাবাড়ি বানিয়েছেন। অথচ, মৃত সুফিয়ানের স্ত্রী আয়েসা বিবি এবং মৃত আলিমুদ্দিনের স্ত্রী নুসেবা বিবির নাম সংখ্যালঘু দপ্তরের পাকাবাড়ি প্রাপকের তালিকায় রয়েছে। সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যখোলা গ্রামের আনোয়ান খান এরআগে দু’বার আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন। আনোয়ার মারা যাওয়ার পর আবার তাঁর স্ত্রী আমেনা বিবির নাম ওই তালিকায় ঢুকেছে। এরকম বহু ঘটনা সামনে এসেছে। মহম্মদপুর গ্রামের শেখ তাজামুল ইসলাম এনিয়ে নন্দীগ্রাম-১বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অবিলম্বে এই সব নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এনিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ মুসিয়ারকে ফোন করা হলে তিনি কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন। অভিযোগকারী তাজামুল ইসলাম বলেন, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে এখনও অনেক কাঁচাবাড়ি আছে। তাঁদের বাদ রেখে সংখ্যালঘু বিভাগের পাকাবাড়ি প্রাপকের তালিকায় অনেক ভূতুড়ে নাম আছে। আগেই পাকাবাড়ি পেয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাঁদের বিধবা স্ত্রীদের নাম রাখা হয়েছে। এই তালিকা সংশোধন না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, একবার আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়া পরিবারকে নতুন করে পাকাবাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে না। পরিদর্শনের সময় এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তারপর ফাইনাল তালিকা তৈরি করে জেলায় পাঠানো হবে। 

    উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুরে আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা পাওয়ার পরও অনেকে বাড়ি তৈরি করেননি। কাঁথি থেকে তমলুক, হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রামে এরকম প্রচুর উপভোক্তা আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিডিও-রা থানায় এফআইআর করেছেন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকেও অনেক আবাস উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করেননি।
  • Link to this news (বর্তমান)