• জামুড়িয়ায় ফের ধস, ধোঁয়ায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা, পুনর্বাসন না দেওয়ায় ক্ষোভ
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ফের শিল্পাঞ্চলে ধস নামায় আতঙ্ক ছড়াল। শুক্রবার গভীর রাতে জামুড়িয়া থানার কেন্দায় জনবসতির অদূরেই ধসে গিয়েছে মাটির বড় অংশ। তা থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ইসিএল পুনর্বাসন না দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, আর মাটি ভরাট করতে হবে না। আমাদেরই মেশিন এনে মেরে ফেলুক। বারবার পুনর্বাসনের জন্য আর্জি জানিয়েছি। কিছুই দেয়নি ইসিএল। স্থানীয় নেতারাও শুধুই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্ষাকালে ধস নিয়ে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে খনি অঞ্চলে। এনিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ থাকলেও ইসিএলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 

    এডিডিএর চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, রানিগঞ্জ প্রকল্পে যাঁদের পুনর্বাসন পাওয়ার কথা তাঁদের দ্রুত পুনর্বাসন দিতে আমরা প্রস্তুত। বহু ফ্ল্যাটও তৈরি হয়ে গিয়েছে। মানুষকে বুঝিয়ে তাঁদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রশাসন। 

    জামুড়িয়ার কেন্দা এলাকাটি সম্পূর্ণ খনি অঞ্চল। সেখানে বিভিন্ন সময়ে অপরিকল্পিতভাবে কয়লা উত্তোলন হয়েছে। তা ঠিকমতো ভরাট না হওয়ায় সেখানে মাটির নীচে আগুন লেগে যায়। মাটির তলায় রয়েছে আগুন। এই অবস্থায় মাটি ধস঩লেই আগুন ও ধোঁয়া বের হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রাণ হাতে নিয়ে বসবাস করছেন খনি অঞ্চলের মানুষজন। শুক্রবার গভীর রাতে বিকট শব্দে কেন্দা ৩ নম্বর ধাওড়াপাড়া এলাকায় ধস নামে। মাটির বড় অংশ থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। সারারাত ঘুমাতে পারেননি বাসিন্দারা। শনিবার সকালেও সকলের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা যায়। শিশু কোলে নিয়ে অসহায় মায়েরা বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা ভালোভাবেই জানেন বসতি এলাকায় একবার ধস নামলে বাঁচার উপায় নেই। কারণ এখানে ধস মানেই তা দিয়ে বেরিয়ে আসে আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়া। যেন মৃত্যুপুরী। এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের দাবি, এনিয়ে এলাকায় তিনবার ধস হল। পাঁচ বছর আগে বড় ধস নেমেছিল। স্থানীয় লোকজনকে স্কুলে, কমিউনিটি হলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পুনর্বাসন দেওয়ার কথা হয়েছিল। বাড়ি করিয়ে দেব, বলেছিলেন নেতারা। ইসিএল কিছু না দেওয়ায় ফের গ্রামের মানুষজন প্রাণ হাতে নিয়ে নিজেদের এলাকায় ফেরেন। শিশু কোলে নিয়ে এলাকার বাসিন্দা প্রতিমা বাউরি বলেন, আমাদের একটা ঘরও দিল না কেউ। কোনও দিন মরে যাব। আমরা মারা যাওয়ার পর কি পুনবার্সন দেওয়া হবে? জবা বাউরি বলেন, আর ড্রোজার দিয়ে ধস ভরাট করতে হবে না। আমাদেরই পিষে দিক। এভাবে চলতে থাকলে মরতে হবেই। 
  • Link to this news (বর্তমান)