• সেই রাতে করিডরে আরও এক ডাক্তার! ফুটেজ ঘিরে রহস্য
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে এবার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ঘিরে রহস্য বাড়ল। সিবিআইয়ের দাবি, তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের সেই রাতে সেমিনার হলের করিডরে আরও এক জুনিয়র ডাক্তারের গতিবিধি ধরা পড়েছে ফুটেজে। কেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে ওই ডাক্তার দু’বার দু’রকম ব্যাখ্যা দেন বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। প্রথমে তিনি বলেন, রাত ৩টে নাগাদ রিপোর্ট দেখাতে গিয়েছিলেন তরুণী চিকিৎসককে। কিন্তু তরুণী ঘুমোচ্ছিলেন। তাই রিপোর্ট না দেখিয়েই ফিরে আসতে হয়। সেই রাতে ওই করিডরে আর কেউ আসা-যাওয়া করেছে কি না, স্পষ্ট করেনি লালবাজারও। তবে হাতে আসা ফুটেজের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের দাবি, রাত ১টা নাগাদ ওই চিকিৎসককে সেমিনার হলের করিডরে দেখা গিয়েছে। রাত পৌনে ৩টে নাগাদ তাঁকে একতলায় নেমে আসতেও দেখা যায়। ওই জুনিয়র ডাক্তার ইমার্জেন্সিতে নাইট ডিউটিতে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি কেন উপরে গেলেন? এই প্রশ্ন করা হলে প্রথমে তিনি জানান, রিপোর্ট নিয়ে ‘দিদি’র সঙ্গে আলোচনা করতেই তিনি ৩টে নাগাদ উপরে গিয়েছিলেন। অথচ ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, তিনি প্রায় দু’ঘণ্টা উপরে ছিলেন। পৌনে ৩টে নাগাদ নেমে আসছেন। যদিও পরে ওই ডাক্তার ফের সিবিআইকে জানান, এক রোগীকে দেখতে উপরে গিয়েছিলেন। সেই রোগীর রিপোর্ট ও চিকিৎসা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় জানতেই প্রায় দু’ঘণ্টা সময় লেগে যায়। কিন্তু তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, তিনি ওই সময় কোনও রোগী দেখেননি। তাহলে কি কিছু গোপন করছেন ওই চিকিৎসক? এবিষয়ে নিশ্চিত হতেই এদিন তাঁর পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয়। ওই সময় কর্তব্যরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্লু মিলেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ইতিপূর্বে কলকাতা পুলিসের তদন্তে জানা গিয়েছিল, ঘটনার দিন ভোর ৪টে নাগাদ সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় উপরে উঠছে। ৪টে ৩৫ মিনিট নাগাদ সে বেরিয়ে এসেছে। তার আগে রাত ২টোয় এক জুনিয়র ডাক্তার সেমিনার হলে গিয়ে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ‘কনসাল্ট’ করেন। 

    ঘটনার রাতে সেমিনার হলের পাশে জুনিয়র ডাক্তারদের রেস্ট রুমে দু’জন চিকিৎসক বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তরুণীর আর্তনাদ তাঁদের কানে পৌঁছল না কেন? এই প্রশ্নে ওই দুই চিকিৎসকের জবাব ছিল, সেমিনার হল সাউন্ড প্রুফ বলে আওয়াজ বাইরে আসেনি। সত্যিই হলটি সাউন্ড প্রুফ কি না, বিশেষজ্ঞ দিয়ে তা পরীক্ষা করায় সিবিআই। সেই রিপোর্টেও এমন কিছু ইঙ্গিত আছে, যা থেকে তদন্তকারীদের অনুমান, কিছু তথ্য লুকনোর চেষ্টা হয়ে থাকতে পারে। তাই ওই দুই চিকিৎসকেরও পলিগ্রাফ টেস্ট করানো হয়েছে। শনিবার আরও এক ইন্টার্নের পলিগ্রাফি হয়। এদিন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষেরও পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছে। রাত ১০টা নাগাদ তিনি সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যান। আজ, রবিবার ফের ডাকা হয়েছে তাঁকে। ধৃত সঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠ এক সিভিকের পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছে এদিন। আজ জেলবন্দি সঞ্জয় রায় বসবে লাই ডিটেক্টর পরীক্ষায়।
  • Link to this news (বর্তমান)