• ৭৫ রক্ষী চেয়ে আর জি করের আবেদন গত বছরই খারিজ হয়
    বর্তমান | ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুখ থেকে কথা খসার আগেই এখন আর জি কর সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের দাবিদাওয়া মঞ্জুর করে দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। বিশেষত সেই দাবি যদি সিসিটিভি, নিরাপত্তারক্ষী বা জুনিয়র ডাক্তারসংক্রান্ত হয়, তড়িঘড়ি মঞ্জুর হয়ে যাচ্ছে। ফিরে যাওয়া যাক ফ্ল্যাশব্যাকে। ২ বছর আগে এই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা অভাব বোধ করায় স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে আরও বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী চেয়েছিল। ৭৫ জন রক্ষী এবং ৩ জন সুপারভাইজার চেয়ে করা সেই আবেদন (ই-ফাইল) ন’মাস ধরে ঘুরেছিলপ্রায় ১৫জন অফিসারের টেবিলে। শেষমেশ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি জানানোহয়, আর জি কর হাসপাতাল একজনও বাড়তি রক্ষী পাবে না! অভ্যন্তরীণ নোটে এর কারণ হিসেবে যে কথা বলা হয়েছে, তা আরও চাঞ্চল্যকর। বলা হয়, আর জি করেবেডসংখ্যার তুলনায় লোকবল ইতিমধ্যেই বেশি আছে। হাসপাতালের শয্যাসংখ্যার নিরিখে যেখানে থাকার কথা ২৮৬ জনের, সেখানে আছেন ৩৫৭ জন (বেসরকারি রক্ষী ও জিডিএ)।

    ৯ আগস্টের নৃশংস ঘটনার পর সেই আর জিকরেএখন আধাসেনা, পুলিস, বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীও সংশ্লিষ্ট আধিকারিক মিলিয়ে আছেন প্রায় ৬০০ জন (৫৮৮)। একটি মাত্র ঘটনার অভিঘাতে বেড়ে গেল ১৩১ জন রক্ষী!হাওয়ায় উড়ে গেল স্বাস্থ্যভবনেরঅফিসারদের বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী না মঞ্জুর করার সপক্ষে পেশ করা অদ্ভুত যুক্তিও!স্বাস্থ্যদপ্তর এবং আর জি কর হাসপাতাল সূত্রেই এই তথ্য সামনে এসেছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘এখন আর ওসব কথা নিয়ে ভাবছি না। যেমন চাওয়া হয়েছে, সেইমতো পর্যাপ্ত রক্ষী দেওয়া হয়েছে আর জি করের নিরাপত্তায়।’

    তবে এখানেই শেষ নয়। ২০২২ সালের ২৯আগস্ট আর জি কর হাসপাতালের সুপার অফিস থেকে ৭৫ জন নিরাপত্তারক্ষী ও তিনজন সুপারভাইজার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তা নাকচ করা হয় ২০২৩ সালের ৬ মে। তার কিছুদিন আগে, ২৪ ফেব্রুয়ারি অভ্যন্তরীণ নোটে সেই ডিমান্ড নাকচ করার পিছনে সরকারি যুক্তি খাড়া করেছিলেন এক পদস্থ আধিকারিক। সেখানে বলা হয়েছিল, ১৯৯১ সালের এস্টাব্লিশমেন্ট টেবিল অনুযায়ী১৩৮৫ বেডসংখ্যার আর জি করের জন্য ‘জিডিএ’র সংখ্যা হওয়া উচিত (নিরাপত্তারক্ষীর উল্লেখই নেই) ২৮৬। কিন্তু, বাস্তব ঘটনা হল এই হাসপাতালে বেডসংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন ২০০৩। প্রশ্ন হল, সেই খবরও কি নেই দপ্তরের কাছে! একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আজও স্বাস্থ্যভবন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নব্বইয়ের দশকের এস্টাব্লিশমেন্ট টেবিল মেনে চলছে—এ বিষয়টিও যথেষ্ট বিস্ময়ের! 
  • Link to this news (বর্তমান)