সংবাদদাতা, বনগাঁ: দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ অবস্থা ঝুলন্ত সেতুর। মরচে ধরেছে, নড়বড়ে হয়েছে লোহার পাটাতন। সেতুতে গাড়ি উঠলেই দোলনার মতো দুলে ওঠে। অথচ এই সেতু দিয়েই নিত্যদিন যাতায়াত করেন নদীর দু’পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। শনিবার সেতু সংস্কারের দাবিতে গোপালনগর থানার বারাকপুরে বিভূতিভূষণ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। বনগাঁ-বাজিতপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ বাদে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা।
উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের বারাকপুরে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতী। তাঁর স্মৃতিতেই তৈরি হয়েছিল বিভূতিভূষণ স্মৃতি ঘাট। এপারে শ্রীপল্লি, বারাকপুর, চালকি ও গোপালনগর গ্রাম। ওপারে মাধবপুর, শিবপুর, সভাইপুর, মণিগ্রাম সহ একাধিক গ্রাম। ২০০০ সালে দু’পাড়ের বাসিন্দাদের কথা ভেবে এই ঝুলন্ত সেতু তৈরি করা হয়েছিল। কৃষকরা তাঁদের ফসল এই সেতু পেরিয়ে গোপালনগর হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। বনগাঁ হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রেও এই সেতু ব্যবহার করতে হয় বাসিন্দাদের। পর্যটকদের কাছেও এই সেতু দর্শনীয়। শীতের মরশুমে পর্যটকদের সেলফি জোন হয়ে ওঠে এই ঝুলন্ত সেতু। বাসিন্দাদের দাবি, সেতুটি তৈরি হওয়ার পর কোনওদিন পুরো সংস্কার হয়নি। দু’-একবার তাপ্পি দিয়ে দায় সারলেও প্রশাসনের উদাসীনতায় সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
সভাইপুরের বাসিন্দা বিশু মণ্ডল বলেন, ‘ফসল বিক্রি করতে এই সেতু পেরিয়ে গোপালনগরে যেতে হয়। সেতুতে উঠলেই দুলতে শুরু করে। ভয় হয়। টোটো গেলে গোটা কাঁপে এই সেতু’। শিবপুরের বাসিন্দা শঙ্কর সরকার বলেন, এই সেতু বিপজ্জনক অবস্থায় ঝুলছে। লোহার পাটাতনে বড় বড় গর্ত। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে’। এ বিষয়ে পিডব্লুডির (রোড) জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র (সেকশন ২) শীর্ষেন্দু নায়েক বলেন, ‘বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তাঁরা যেমন নির্দেশ দেবেন, কাজ হবে’।