সন্দীপ ঘোষ। আর জি করের প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ। বর্তমানে সিবিআই তার বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে। দফায় দফায় জেরা চলেছে গত কয়েকদিন ধরে। ভুরি ভুরি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। আর সেই সব অভিযোগের বহর জানলে অবাক হবেন আপনিও।
গোটা আরজি করকে কার্যত নিয়ন্ত্রণ করত সন্দীপ ঘোষ। তার দাপটই ছিল আলাদা। একটা নির্দিষ্ট কোর টিম নিয়ে কাজ করত সন্দীপ। এর আগেই তৎকালীন ডেপুটি সুপার আখতার আলিও এই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন।
একেবারে ভয়াবহ অভিযোগ। মূলত বেওয়ারিশ মৃতদেহ থেকে দেহাংশ কেটে নেওয়ার একটা চক্র কাজ করত। আখতার আলি নিজেও এই বেওয়ারিশ লাশ নিয়ে অবৈধ ব্যবসার অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
ঠিক কী ধরনের অভিযোগ?
সরাসরি হয়তো প্রমাণ করাটা অত্যন্ত কষ্টের। তবে যে সমস্ত দাবিদারহীন দেহ আসত সেখান থেকে দেহাংশ কেটে বিক্রি করার একটা চক্র কাজ করত। সেগুলি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হত। এর পেছনে মোটা টাকার লেনদেন করা হত। একেবারে ভয়াবহ অভিযোগ। সব মিলিয়ে আরও প্যাঁচে পড়ছেন সন্দীপ ঘোষ।
সেই সঙ্গেই ডেড বডি নিয়েও একেবারে প্যাকেজ তৈরি করা থাকত বলে অভিযোগ। কার্যত মর্গেও টাকার একটা বড় বেআইনি লেনদেন করা হত। প্রতিটি দেহ ছাড়ার বিনিময়ে পরিজনদের কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করা হত। আর সেই টাকা হাত ঘুরে যেত ওপরতলায়। অভিযোগ।
পরিজনদের আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে টাকার দাবি করা হত। একেবারে প্যাকেজ সিস্টেমে টাকা নেওয়া হত। তার সঙ্গে কাচের গাড়ির ব্যবস্থাও থাকত।
ক্রমেই আরজি করের ভেতরের দগদগে ক্ষতর বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করেছে। বছরের পর বছর ধরে একাংশ চিকিৎসক এনিয়ে সরব হয়েছেন। আবার অপর অংশ গা বাঁচিয়ে চাকরির দিনগুলো কাটিয়ে দিয়েছেন। আর যে অংশের চিকিৎসকরা সন্দীপ ঘোষের কথা মতো কাজ করেছেন তাঁদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে নানা ধরনের সুবিধা। সব মিলিয়ে হাসপাতালের অন্দরে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ ক্রমেই সামনে আসছে।
এদিকে সেই আরজি করের তদন্তে নেমে এবার রাজ্যের অন্তত ১৫টি জায়গায় ম্যারাথন অভিযানে নেমেছে সিবিআই। সন্দীপ ঘোষের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। একের পর এক স্বাস্থ্য কর্তার বাসভবনে চলছে তল্লাশি। টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। তাদের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।