বাড়ছে জন্ডিস আক্রান্তের সংখ্যা, বাঁকুড়ায় ক্যাম্প চালু স্বাস্থ্য দফতরের
এই সময় | ২৬ আগস্ট ২০২৪
বর্ষার সময় জলবাহিত অসুখের প্রাদুর্ভাব অনেক জায়গায় বাড়ছে। জন্ডিসও জলবাহিত রোগ। এবার এই অসুখে আক্রান্ত বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ব্লকের জামিরাপাড়া গ্রাম।গ্রামবাসীদের দাবি, ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তদের একটা বড় অংশই শিশু ও স্কুল পড়ুয়া। আর তাতেই জন্ডিসের আতঙ্কে কাঁপছে গোটা গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জন্ডিসের উৎস খুঁজতে ইতিমধ্যেই গ্রামের পানীয় জলের প্রতিটি উৎস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর তা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। গ্রামে শিবির করে সংগ্রহ করা হয়েছে গ্রামবাসীদের রক্তের নমুনাও।
সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহ দুই আগে। বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ব্লকের জামিরাপাড়া গ্রামে একের পর এক শিশুর জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। তাদের রক্ত পরীক্ষায় জানা যায় তারা জন্ডিসে আক্রান্ত। তারপর থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে আক্রান্তের সংখ্যা। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খবর পেয়ে এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গ্রামে যান খাতড়ার মহকুমা শাসক নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়- সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরাও। স্বাস্থ্য দফতরের টিম গ্রামে গিয়ে উপসর্গ থাকা গ্রামবাসীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে।
জন্ডিসের উৎস খুঁজতে সংগ্রহ করা হয় গ্রামে থাকা একাধিক টিউবওয়েল, সাব মার্সেবল কলের জল ও পুকুরের জলের নমুনা। জন্ডিস ঠেকাতে আপাতত ওই উৎসগুলির জল ব্যবহার করার জন্য গ্রামবাসীদের নিষেধ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ওই গ্রামের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দরকারে নিয়মিত মেডিক্যাল টিম পাঠানো হবে। আক্রান্তদের বাড়ি ও তার লাগোয়া এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পানীয় জল হ্যালজেন ট্যাবলেট দিয়ে পান করতে বলা হয়েছে আক্রান্তদের।
বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে প্রশাসনের তরফে গ্রামে প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক। তারপরও জন্ডিসের আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না জামিরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পানীয় জলের নমুনায় জন্ডিসের ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। সম্ভবত ভারী বৃষ্টির কারনেই পানীয় জলের ওই উৎসগুলিতে জল ঢুকে এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে। আপাতত ওই গ্রামের মানুষকে স্থানীয় পানীয় জলের উৎসগুলিকে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।