‘মর্যাদা রাখতে পারলাম না’, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ‘বঙ্গরত্ন’ ফেরালেন লেখক
প্রতিদিন | ২৬ আগস্ট ২০২৪
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: কর্তব্যরত অবস্থায় রাজ্যের এক সরকারি হাসপাতালে ধর্ষণ-খুন হয়েছেন তরুণী চিকিৎসক। আর জি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে রাজ্যজুড়ে। এবার সেই ঘটনার প্রতিবাদে (Protest) ‘বঙ্গরত্ন’ পুরস্কার ফেরালেন আলিপুরদুয়ারের লেখক-গবেষক পরিমল দে। তিনি মহাত্মা গান্ধীর উপর গবেষণা করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বার্তা দিয়ে তিনি বলেছেন, ”আমাকে যাঁরা পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করেছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কিন্তু সেই মর্যাদা রাখতে পারলাম না।”
২০১৯ সালে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ‘বঙ্গরত্ন’ পুরস্কার (Award) দেওয়া হয়েছিল আলিপুরদুয়ারের লেখক-গবেষক পরিমল দে-কে। তিনি গান্ধী গবেষক বলে পরিচিত। মহাত্মা গান্ধীকে (Mahatma Gandhi) নিয়ে তাঁর বেশ কয়েকটি বই রয়েছে। এর মধ্যে ‘বাপু ১৫০’ বইতে প্রধানমন্ত্রীর কিছু কিছু নীতির তিনি তীব্র সমালোচনা করেছেন। রবিবার আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) পরিমলবাবু নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, শুধু আর জি করের ঘটনাই নয়। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দুর্নীতি-সহ একাধিক কেলেঙ্কারির খবরে তিনি হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। আর জি কর তাঁকে আরও ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। সেই কারণে তিনি রাজ্য সরকারের দেওয়া ‘বঙ্গরত্ন’ পুরস্কার ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। পরিমলবাবুর কথায়, ”শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন করতে পারছি না। কিন্তু বাঙালি, বঙ্গবাসী ভারতের নানা প্রান্তে যাঁরা আন্দোলনে শামিল, তাঁদের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। আর সেই জন্য আমি রাজ্যের দেওয়া ‘বঙ্গরত্ন’ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে পরিমলবাবুর আরও বক্তব্য, ”মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, রাজ্যে নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে আইনের শাসন ফেরানো হোক। এর আগে নানা ঘটনায় আমরা দেখেছি, প্রশাসন দোষীকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। যার জন্য হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে বারবার ধাক্কা খেতে হয়েছে। এবার সেসব বন্ধ হোক, এটা আমার আর্জি।” আর জি কর (RG Kar Hospital)মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে অভিষেকের ‘এনকাউন্টার’ নিদানকে ‘দার্শনিক’ বলে মনে করছেন তিনি। তবে সবমিলিয়ে এই ঘটনায় তাঁর ‘বঙ্গরত্ন’ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান বড়সড় প্রতিবাদের নজির রাখল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।