• ‘অপপ্রচারের’ মোকাবিলায় সক্রিয় হচ্ছেন না কেন, প্রশ্ন তৃণমূলেই
    এই সময় | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তিনিও দোষীদের দ্রুত শাস্তি ও নির্যাতিতার ন্যায় বিচার চান বলে বারবার উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ধরনের ঘটনা রুখতে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।তারপরেও আরজি করের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ করে বাম-বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে অপপ্রচারে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিরোধীপক্ষের এই অপপ্রচারের মোকাবিলা করতে নেমেছেন জোড়াফুল নেতৃত্বও। দলের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মিছিল-সভা করা হয়েছে।

    সামাজিক মাধ্যমেও বিজেপি, সিপিএম-সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রচারের মোকাবিলা করছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। যদিও বিরোধীপক্ষের এই লাগাতার প্রচারের মোকাবিলায় তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের সব পদাধিকারী, জনপ্রতিনিধিরা সমান উদ্যোগী নন বলে দলেরই একাংশ মনে করছেন।

    সূত্রের খবর, সামাজিক মাধ্যমে তৃণমূলের যে কর্মীরা সক্রিয় রয়েছেন, তাঁদের একাংশকে নিয়ে রবিবার একটি সভায় দলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ অভিযোগ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমাদের দলে কি কম জনপ্রিতিনিধি রয়েছেন? কম পদাধিকারী রয়েছেন? অধিকাংশের হাতে তো দামি স্মার্টফোন রয়েছে। তা হলে অপ্রচারের কেন মোকাবিলা করা হবে না? জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ফেসবুকে কোনও পোস্ট করবেন না, এটা হতে পারে না। অনেক পদাধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট রি-পোস্ট পর্যন্ত করছেন না।’

    সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে এই সভায় কুণাল ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, কাউন্সিলার অরূপ চক্রবর্তী, ঋজু দত্ত-সহ অনেকেই।

    স্নেহাশিসের কথায়, ‘প্রচুর ভুয়ো খবর, গুজব ছড়ানো হচ্ছে। আমাদের সবাইকে এর মোকাবিলা করতে হবে। অনেক সময়ে আমরা নিজেদের ফেসবুক পেজে অথবা এক্স হ্যান্ডলে নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে পোস্ট করি। সেই কর্মসূচি পোস্ট করার পাশাপাশি সমস্ত অপপ্রচারের মোকাবিলাও করতে হবে।’

    কিছু দিন আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে এক্স হ্যান্ডলে দীর্ঘ একটি পোস্ট করে দাবি করেছিলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে বিরোধী শিবির ‘টুলকিট’ ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে ঢালাও অপপ্রচার করছে। গেরুয়া শিবিরের আইটি সেল চার দিনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে দু’লক্ষ পোস্ট করেছিল বলে সাকেত পরিসংখ্যান দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। দেশের বাইরে থেকেও এই প্রচার করা হচ্ছে বলে সাকেত দাবি করেছিলেন। এক্স হ্যান্ডলে তিনি দাবি করেন, ‘প্রায় ৪৫ শতাংশ পোস্ট হয়েছে ইউএসএ থেকে, এছাড়া রাশিয়া, নাইজেরিয়া, কলম্বিয়া, সুরিনামের মতো দেশ থেকেও পোস্ট হয়েছে।’

    সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মীদের সংগঠন ‘ফ্যাম’ এই প্রচারের মোকাবিলাও করছে। এছাড়াও জোড়াফুলের অন্য একটি সোশ্যাল মিডিয়া সংগঠনও এর মোকাবিলা করছে। কয়েকজন জোড়াফুল নেতাও আলাদা ভাবে বিরোধী শিবির অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পাল্টা আক্রমণ শানাচ্ছেন। তবে তৃণমূলের সমস্ত পদাধিকারী, জনপ্রতিনিধিরা সমান ভাবে উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলে দলের একাংশের পর্যবেক্ষণ।

    এ দিনের সভার পর কুণাল বলেন, ‘ব্লক স্তর পর্যন্ত অনেক সভাপতি রয়েছেন। অনেক নেতা কমিটিতে নিজেদের নাম দেখার জন্য লবি করে বেড়ান। এমপি, এমএলএ, কাউন্সিলার হবেন বলে যাঁরা টিকিটের জন্য লাইন লাগিয়ে থাকেন, তাঁদের অনেকেরই এই কুৎসার মোকাবিলা করার কোনও প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। এমপি, এমএলএ, কাউন্সিলারদেরও অনেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। এটা আমরা দলকে বলব।’
  • Link to this news (এই সময়)