• এবার কাটোয়াতেও তাঁতবস্ত্রের মেলা, স্থান পাবেন ১০০ শিল্পী
    বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: বর্ধমানের পর এবার কাটোয়াতেও বসবে তাঁত কাপড়ের মেলা। পুজোর আগে বাংলার তাঁতশিল্পীদের মুখে হাসি ফোটাতেই এই উদ্যোগ। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার তাঁতশিল্পীরা তাঁদের হাতে বোনা তাঁতের সম্ভার নিয়ে আসবেন মেলায়। তাঁদের সামগ্রীর বিক্রির সুযোগ বাড়বে। হ্যান্ডলুম দপ্তর থেকে দুই মেলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। 

    কালনা হ্যান্ডলুম দপ্তরের অফিসার রণজিত মাইতি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই বর্ধমানে মেলা বসবে। তারপরেই কাটোয়া শহরে মেলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বর্ধমানে প্রতিবছর পুজোর আগে এমন মেলা বসলেও কাটোয়া শহরে এবারই প্রথম মেলা বসবে। 

    পূর্ব বর্ধমান জেলার একটা বড় অংশের মানুষ তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। জেলায় প্রায় ৭৪ হাজার তাঁতশিল্পী রয়েছেন। যার মধ্যে কাটোয়া ও কালনা মহকুমাতে সংখ্যাটি বেশি। জেলার তাঁতবলয় বলে পরিচিত পূর্বস্থলী। কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রাম ও শ্রীরামপুরের তাঁতের হাটের পর কাটোয়া শহরেও সেরকম হাট তৈরি হবে। জায়গা দিচ্ছে আরএমসি মার্কেট। সেখানে ১৫ হাজার স্কোয়ার ফুট জায়গায় হাটটি তৈরি করা হবে। ৩০টি স্টল করা হবে। ১০০ জন তাঁতশিল্পী সেখানে বসতে পারবেন। এদিকে কাটোয়া আরএমসি মার্কেটে আগে থেকেই শান্তিপুর, সমুদ্রগড় প্রভৃতি এলাকা থেকে বহু তাঁতশিল্পী দোকান দেন। কিন্তু তাঁদের আক্ষেপ, ধাত্রীগ্রাম, শ্রীরামপুরের হাটগুলি যতটা প্রচার পায়, কাটোয়ায় হাটের সেই প্রচার নেই। শহরে তাঁতবস্ত্রের ভালো চাহিদা রয়েছে। ফ্যাশনের জগতে তাঁতের বস্ত্রের কদর আগেও ছিল, এখনও আছে। জানা গিয়েছে, বর্ধমানে মেলায় ৪১টি স্টল থাকবে। আর কাটোয়া শহরে ৩০টি স্টল দেওয়া হবে তাঁতশিল্পীদের জন্য। পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও নদীয়া, হুগলি সহ বিভিন্ন জেলার তাঁতশিল্পীরা ওই মেলায় তাঁদের শাড়ি বিক্রি করার সুযোগ পাবেন। তাতে পুজোর মুখে আয় বাড়বে শিল্পীদের। 

    প্রতি বছরই শিল্পীরা শাড়ি বিক্রি না হওয়ার অভিযোগ করেন। তাই পুজোর আগে শিল্পীদের আয় বাড়াতে এই উদ্যোগ। কাটোয়ার ঘোড়ানাশ, মুস্থলী, কেতুগ্রামের বেনিনগর, নিরোল প্রভৃতি এলাকার তাঁতবস্ত্র বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। কেতুগ্রামের বেনিনগর এলাকায় মুর্শিদাবাদ থেকে সূতো আসে। আর নিরোলে সূতোর রং করা হয়। এখন ভেষজ রং তাঁতের কাপড়ে দেওয়া হচ্ছে। নিরোলে যাতে আরও উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে রং করা যায়, তারজন্য মেশিন দেবে সরকার। এইসব অঞ্চলে প্রায় ৪৪ হাজার তাঁতশিল্পী রয়েছেন। মহকুমায় মোট ৩০টি তাঁত সমবায় ও ৮টি ক্লাস্টার রয়েছে। এরমধ্যে ৪টি সমবায়ের মাধ্যমে ৮টি ক্লাস্টারই প্রতিবছর তন্তুজকে তাঁতের কাপড় বিক্রি করে। কাটোয়াতে তাঁতশিল্পীদের জন্য প্রায় ১ হাজার ১৬৬ টি ওয়ার্ক শেড তৈরি করেছে রাজ্য সরকার।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)