• তারাপীঠে ৪ পর্যটককে ধাক্কা বেপরোয়া গাড়ির
    বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রবিবার দুপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র তারাপীঠে। সিগন্যাল উপেক্ষা করে চারজন পর্যটককে রাস্তার অন্যদিকে এসে ধাক্কা মারল বেপরোয়া চারচাকা গাড়ি। তারপরই গাড়ির গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চালক। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি চালকের। ঘটনাস্থলে থাকা অন্যান্য গাড়ির চালক রাস্তার উপর তাঁদের গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে ঘাতক গাড়িটি ধরে ফেলে। ঘাতক গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও আকস্মিক এই ঘটনায় অন্যান্য পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চারজন পর্যটক লজ থেকে বেরিয়ে পায়ে হেঁটে দুপুরের খাবার খেতে হোটেলে যাচ্ছিলেন। আটলা তিন মাথা মোড়ের কাছে তাঁরা রাস্তা অতিক্রম করছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে একটি সাদা রঙের বেপরোয়া চারচাকা গাড়ি রাস্তার উল্টোদিকে এসে তাঁদের ধাক্কা মেরে চলে যায়। তাঁর মধ্যে একজনের বুকের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছটফট করতে থাকে তাঁরা। এরই মধ্যে কিছুটা দূরে থাকা গাড়িস্ট্যান্ডের চালকরা তাঁদের নিজের গাড়ি রাস্তার উপরে দাঁড় করিয়ে দেন। তাঁদেরও ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ঘাতক গাড়ির চালক। তাতে কমবেশি আরও চার-পাঁচজন জখম হয়েছেন। যদিও শেষমেশ সে পালাতে পারেনি। গাড়ি সহ ধরা পড়ে যায়। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জখমদের উদ্ধার করে অটোয় চাপিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে আসেন। 

    মেডিক্যাল সূত্রে খবর, দু’জনের আঘাত গুরুতর। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। জখমদের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে। এদিন সকালে পাঁচজন বন্ধু মিলে একটি চারচাকা গাড়ি নিয়ে তারাপীঠে আসেন। জখম বেরসরকারি ফিনান্স কোম্পানির কর্মী সৌভিক সিংহরায় বলেন, আমরা লজ থেকে বেরিয়ে হোটেলে খাবার খেতে যাচ্ছিলাম। তখনই এই ঘটনা ঘটে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে অনেকেই আঁতকে উঠছেন। তারাপীঠের বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী বাবুল মণ্ডল বলেন, ওই গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। গাড়িটিকে ধরতে গিয়ে আমাদের কয়েকজনও জখম হয়েছেন। 

    এদিকে এই ঘটনায় কৌশিকী অমাবস্যার আগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে তীর্থভূমিতে। দুর্ঘটনা রুখতে ও যান নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ততম দ্বারকা ব্রিজের উপর চারমাথা ও তিনমাথা আটলা মোড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো হয়। কিন্তু সিগন্যাল চালু হলেও নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই। অভিযোগ, লাল বাতি জ্বললেও দাঁড়ায় না অধিকাংশ গাড়ি। যার জেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। কিন্তু এদিনের ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, পথ নিরাপত্তার জন্যই সিগন্যাল ব্যবস্থা। কিন্তু না মানায় ওই জায়গাগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠছে। 

    টিআরডিএর ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় অবশ্য এনিয়ে পুলিসের সদিচ্ছাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, টিআরডিএর বৈঠকে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পুলিস-প্রশাসন কেন উদ্যোগ নিচ্ছে না জানি না। বারবার ট্রাফিক পুলিস দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। বৈঠকে পুলিস ব্যবস্থা নিচ্ছি বললেও বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন ঘটছে না। জনবহুল তিন মাথা মোড়ের সিগন্যাল স্থলে পুলিস থাকলে লোকাল গাড়িগুলিও ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য হবে। পু঩লিস জানিয়েছে, শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)