• হাসপাতালের ফোনে ‘মৃত্যু’ ঘিরে বিভ্রান্তি, মাচা নিয়ে হাজির আত্মীয়রা দেখলেন বেঁচে রোগী
    বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: সাপের কামড়ে অসুস্থ মহিলার ‘মৃত্যু’র খবর গেল বাড়িতে। শনিবার রাতে হাসপাতালের সেই ফোন পেতেই কান্নার রোল। সকাল সকাল পরিজন, গ্রামবাসীরা শবদেহ নিয়ে যাওয়ার মাচা নিয়ে  হাজির হাসপাতালে। শ্মশানযাত্রীরাও জড়ো হতে থাকেন এক এক করে। শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পরিবার ও গ্রামবাসীরা জানতে পারলেন সুস্থ রয়েছেন রোগী! বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রবিবার এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়।

    প্রশ্ন উঠছে, সিসিইউয়ে ভর্তি থাকা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মৃত্যুর খবর দিল কে? পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে ফোন করে মাঝরাতে রোগীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। কিন্তু সেকথা অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ফোন করা হয়েছিল। কারা ভুল করেছে, তা নিয়ে এদিন দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালে চলে টানাপোড়েন। রোগীর কাকা অরুণ কুমার ঘোষ বলেন, আমার জামাইয়ের কাছে হাসপাতাল থেকেই ফোন এসেছিল। বলা হয়, ভাইঝির মৃত্যু হয়েছে। সেই খবর শুনে সকালে মৃতদেহ বহন করার খাটিয়াও নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু জানতে পারি রোগী সুস্থ রয়েছে।

    সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগের মন্তব্য, এমন খবর কে দিল, আমরাও জানতে চাই। সিসিইউ ওয়ার্ডে কোনও রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলে পরিবারকে ফোন করা হয়। রোগীর পরিবার হয়তো ভুল বুঝেছে। কোনও অভিযোগ না পেলেও ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    হাসপাতাল সূত্রে খবর, বালুরঘাট শহরের কাছেই ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা অনীতা ঘোষ (দাস)। তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি। শনিবার বিকেলে বাড়িতে অনীতার পায়ে সাপ কামড় দেয়।  অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ইমার্জেন্সি থেকে প্রথমে তাঁকে ফিমেল ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় সিসিইউ বেডে দেওয়া হয়েছিল। রাতে পরিবারের লোকও ছিলেন হাসপাতালে। রাত একটার পর ওয়ার্ড থেকে ফোন পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকরা। তাঁরা সকলেই বাড়ি চলে যান। সিসিইউ বিভাগ হওয়ায় সকালে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। ততক্ষণে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। দেহ নিয়ে যেতে তাঁরা বাঁশের খাটিয়া, ফুল ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে গিয়েছিলেন।  তারপর রোগী সুস্থ রয়েছেন জানতে পেরে হাসি ফোটে তাঁদের মুখে।

    প্রতিবেশী শম্পা মাহালি বলেন, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ ছিল বলে সিসিইউ ইউনিটে ভর্তি করে নিয়েছিল। রাতে হাসপাতাল থেকে ফোন করে কেন ভুল খবর দেওয়া হয়েছিল, আমরা তার জবাব চাই।  হাসপাতালে রোগীর পরিজনরা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)