• উত্তরবঙ্গে উস্কানি ছড়ানোর চেষ্টা বরদাস্ত নয়, হুঁশিয়ারি আদিবাসী বিকাশ পরিষদের
    বর্তমান | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গে কোনওরকম উস্কানি ছড়ানোর চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না। পাহাড়, তরাই-ডুয়ার্সকে অশান্ত করার চেষ্টা হলে আদিবাসীরা তাদের শক্তি বুঝিয়ে দেবে। নাম না করে বিজেপিকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকি। তিনি বলেন, বিমল গুরুং একসময় পাহাড়ের পাশাপাশি তরাই-ডুয়ার্সের ৩৯৬টি মৌজা নিয়ে গোর্খাল্যান্ডের জিগির তুলে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আদিবাসীরা রাস্তায় নেমে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের আন্দোলনের ঝাঁঝ কতটা। উত্তরবঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টায় যেভাবে উস্কানি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আবার রাস্তায় নামবেন আদিবাসীরা। কোনওভাবে উত্তরের মাটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদকে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না।

    বঞ্চনার জিগির তুলে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তরবঙ্গে উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে। কখনও উত্তরবঙ্গকে সরাসরি উত্তরপূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। কখনও আবার উত্তরবঙ্গের স্বার্থে কেএলও প্রধান জীবন সিংহের হাত ধরার কথা বলেছেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজও। উত্তরবঙ্গের মাটিতে পা রেখে একইভাবে উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধেও। রবিবার জলপাইগুড়িতে শান্তনু বলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষ যা চাইবে, এখানে তাই হবে। আমি মনে করি, এখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি হওয়া উচিত।

    কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুর এমন মন্তব্যের পরই গর্জে উঠেছে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিরসা বলেন, বাংলায় আমরা ভালো আছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আদিবাসীদের জন্য অনেক কিছু করেছে। এখন পাট্টা মিলছে। করম পুজোয় ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য। এটা আদিবাসীদের গর্বের বিষয়। আমাদের আরও কিছু দাবি আছে। সেগুলোও মিটবে বলে আশাবাদী। তবে কোনওভাবে উত্তরবঙ্গকে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টাকে বরদাস্ত করা হবে না। আদিবাসীরা বুক চিতিয়ে লড়াই করবে। এদিন জলপাইগুড়িতে মতুয়াদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। ছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনার হাত থেকে মুক্ত করতে হলে রাজ্যে সরকারের বদল ঘটাতে হবে। উত্তরবঙ্গ চিকেন নেক। চিনের থ্রেট আছে। আমি মনে করি, এখানে সেন্ট্রাল রুল জারি হোক। যদিও এরপরে শান্তনুর সাফাই, আমি বঙ্গভঙ্গের কথা বলছি না। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এখানে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ আছে। যদিও বঞ্চনার ইস্যুতে বিরসার পাল্টা তোপ, উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচিত বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা কী করছেন? তাঁরা বঞ্চনা ঘোচাতে কেন্দ্র থেকে কী প্রকল্প আনছেন?  (কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।-নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)