• বৃ্ষ্টি ও নর্দমার জল ঘরে জমে সাত দিন, পথ অবরোধ হাওড়ায়
    আনন্দবাজার | ২৬ আগস্ট ২০২৪
  • হাওড়ার নিকাশির ব্যবস্থা নিয়ে দু’মাস আগেই নবান্নে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার টানা সাত দিন জমা জলে বন্দি থাকার পরে সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল উত্তর হাওড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে। পুরসভার নিকাশি-ব্যর্থতার প্রতিবাদে রবিবার প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে সালকিয়া চৌরাস্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা।

    বর্ষায় সামান্য ভারী বৃষ্টিতেই অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জল জমবে, হাওড়ায় তা নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে সেই জল নামতে কত ক্ষণ সময় নিচ্ছে, সে দিকেই নজর থাকে বাসিন্দাদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হাওড়া পুরসভা যে ডাহা ফেল, তা এ বার বর্ষার শুরু থেকেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। মাত্র এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই ভেসে যাচ্ছে হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬-১৮টি ওয়ার্ড। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই জল নামতে সময় লেগে যাচ্ছে তিন থেকে চার দিন। চলতি বর্ষার মরসুমে জমা জলের সব থেকে বেশি সমস্যা দেখা যাচ্ছে হাওড়া পুরসভার ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ২০, ২১, ২২, ২৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৯, ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে।

    এই মধ্যে আবার সব চেয়ে বেশি ভুগছেন উত্তর হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। গত কয়েক দিনে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই ৬ থেকে ১০ ইঞ্চি জল জমে রয়েছে অরবিন্দ রোড, গজানন বস্তি এলাকা, ধর্মতলা রোড, ভৈরব ঘটক লেন, তাঁতিপাড়া এলাকা, শম্ভু হালদার লেন, বাজলপাড়া এলাকায়। এর মধ্যে ভৈরব ঘটক লেনেই জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কলেজপড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছিল। গজানন বস্তির এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃষ্টির জলের সঙ্গে নর্দমার জল মিশে ঢুকে পড়ছে ঘরে। প্রতিটি ঘরে সেই বিষাক্ত জল দাঁড়িয়ে থাকায় বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

    সাত দিন ধরে অপেক্ষা করার পরেও সেই জল না নামায় এ দিন দুপুরে বস্তির বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে সালকিয়া চৌরাস্তা অবরোধ করেন। অবরোধকারীদের দাবি ছিল, প্রশাসন জল নামানোর ব্যবস্থা না করলে অবরোধ উঠবে না। পরে উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়। পরে বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি অবরোধকারীদের বোঝালেও এটা ঠিকই যে, প্রতি বছর নর্দমা থেকে পলি তোলার যে কাজ (ডিসিল্টিং) হয়, তা এ বছর হয়নি। গত জুন মাসে লোক দেখানো কিছু কাজ হয়েছিল। অথচ রাজ্য সরকার কোটি কোটি টাকা নিকাশির জন্য পুরসভাকে দিয়েছে। সেই টাকা কোথায় খরচ হল?’’

    হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পলি তোলার কাজ গত বছর পুজোর পর থেকেই করা হয়েছে। আসলে এ বার কেএমডিএ-র সঙ্গে নিকাশি নালাগুলির সংস্কার নিয়ে কিছুটা সমন্বয়ের অভাব হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। সোমবারই পুরসভায় নিকাশি নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)