মণিশংকর চৌধুরী: পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের অন্যতম আহ্বায়কের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে তাঁদের সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন এই প্রসঙ্গ উঠতেই কার্যত মেজাজ হারান তথাকথিত ছাত্র নেতা শুভঙ্কর হালদার। সংবাদমাধ্যমের সামনেই কার্যত তাঁর হুমকি,”৩৭৬ ধারায় মামলার প্রমাণ দেখাতে পারলে, আমিও দেখে নেব।” স্বাভাবিকভাবেই ছাত্র নেতার মুখে এহেন হুমকি শুনে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের অন্যতম আহ্বায়ক শুভঙ্কর হালদারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ পোস্ট করেন তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। নবদ্বীপ থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের নম্বর উল্লেখ করে ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘নবদ্বীপ থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগ অনুযায়ী এই ব্যাক্তি যার নাম শুভঙ্কর হালদার সে বাইকে করে তুলে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার অভিযোগকারিণী মহিলাকে যৌনহয়রানি করে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যেহেতু নিগৃহীতার পরিচয় গোপন রাখা কাম্য, তাই অভিযোগকারিণীর তথ্য প্রকাশ করলাম না।’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘ইনিই সেই শুভঙ্কর হালদার কিনা, যিনি আরজিকরের নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন!! আচ্ছা কেউ নিজে মলেস্টার/এবিউসার হলে কিংবা যৌননিগ্রহের কান্ডে অভিযুক্ত হলে সে কি আর একটা ধর্ষণের নিন্দা করতে পারে না?’
এদিকে তাদের নবান্ন অভিযান নিয়ে সোমবার সন্ধেয় সাংবাদিক সম্মেলন করেন শুভঙ্কররা। সেখানে তাঁকে যৌন নিগ্রহের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করতেই মেজাজ হারান তিনি। উগ্রভাবে বলেন, “বিরোধী রাজনীতি করলেই জেলে থাকতে হবে। আমি তিনবার জেলে গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ৩২টা মামলা আছে। আর যাঁরা আমার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন, তাঁরা ৩৭৬ ধারায় মামলার প্রমাণ দেখাতে পারলে, আমিও দেখে নেব।” শুধু ‘হুমকি’ দেওয়া নয় সাংবাদিককে একটি রাজনৈতিক দলের ‘দলদাস’ বলে কটাক্ষ করেন। রীতিমতো তর্ক-বিতর্ক বেঁধে যায় সাংবাদিক সম্মেলনে। শেষে পরিস্থিতি এতোটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে শুভঙ্করের আচরণের জন্য তাঁরই সতীর্থ সায়ন লাহিড়ীকে ক্ষমা চাইতে হয়।