চোপ! নারী নির্যাতনের কেস নিয়ে প্রশ্ন করতেই ক্ষিপ্ত ‘ছাত্র’-নেতা
এই সময় | ২৭ আগস্ট ২০২৪
এই সময়: নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর প্রতিনিধিদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজেই নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত এবং তাঁর নামে নবদ্বীপ থানায় কেস রয়েছে। তৃণমূলের একাধিক নেতা এই অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ কি সত্য? সোমবার সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন শোনার পরই মেজাজ হারালেন ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর স্বঘোষিত এক নেতা শুভঙ্কর হালদার।বাম ও তৃণমূল আগেই অভিযোগ তুলেছে, শুভঙ্কর সক্রিয় ভাবে বিজেপি ও আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত। শুভঙ্কর এ দিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে স্বীকার করে নেন, তিনি আরএসএস-এর একজন সক্রিয় সদস্য, তা নিয়ে তিনি গর্বিতও। তিনি এও স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৩০-৩২টি পুলিশ কেস আছে। তিন বার তিনি জেলেও গিয়েছিলেন। যদিও শুভঙ্করের দাবি, সবই রাজ্যের শাসক দলের সাজানো।
রবিবার তৃণমূল কাউন্সিলার অরূপ চক্রবর্তী এবং টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, শুভঙ্কর নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেও তাঁর বিরুদ্ধেই নবদ্বীপ থানায় শ্লীলতাহানির মামলা রয়েছে। অরূপ লিখেছেন, ওই মামলা দায়ের হয়েছিল ২০১৪-এর অক্টোবরে। তৃণাঙ্কুরের দাবি, যে সময়ে এই অভিযোগ ওঠে তখন তিনি টিএমসিপিতে ছিলেন। পরে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তারও পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
এই অভিযোগগুলি কি ঠিক?
এই প্রশ্নের উত্তরে এ দিন বার বার মেজাজ হারান শুভঙ্কর। প্রশ্নকারীদের ‘চোপ’-ও বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘আমার নামে নবদ্বীপ থানায় ৩০ থেকে ৩২টা কেস রয়েছে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে শাসকের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে এই ধরনের কেস দেওয়া হয়। আমি তিন বার জেল খেটেছি। আমাকে পুলিশ মারতে মারতে বাড়ি থেকে তুলেও নিয়ে গিয়েছে।’
তৃণাঙ্কুরের অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘রেপ কেস হলে ৩৭৬ ধারায় (ভারতীয় দণ্ডবিধির) মামলা হয়। সেটা কি উনি (তৃণাঙ্কুর) দেখাতে পারবেন?’ তাঁর আশঙ্কা, তাঁকে ফেক কেসে আবার ফাঁসানো হতে পারে। কিন্তু নারী নির্যাতনের মামলা কি তাঁর বিরুদ্ধে আছে? এই প্রশ্ন শুনে আবারও মেজাজ হারান তিনি। বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে যাঁরা শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করেন, সবার নামেই এমন কেস আছে।’
এ প্রসঙ্গে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবীর কথাও বলেন তিনি। শুভঙ্করের নিজের পরিচয় কী? তিনি কি আদপেই ছাত্র? সাংবাদিক বৈঠকে একবার তিনি দাবি করেন, ‘আমি স্কুল শিক্ষক। ছাত্র সঙ্ঘ করি।’ আবার দাবি করেন, ‘আমি একজন ছাত্র।’
এ দিন এক মহিলা ‘ছাত্র সমাজ’-এর প্রেস কনফারেন্সে ছিলেন। তিনি দাবি করেন, ‘আমি হাওড়া গার্লস কলেজে হিস্ট্রি নিয়ে এমবিএ করি!’ এমন কোর্সের অবশ্য কোনও অস্তিত্ব ভূ-ভারতে নেই।