• জন্মাষ্টমীর পুণ্যতিথিতে দুর্গোৎসবের খুঁটিপুজো
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: সোমবার জন্মাষ্টমীর পুণ্যতিথিতে দুর্গোৎসবের খুঁটিপুজোর আয়োজন করল দুর্গাচক ব্যবসায়ীবৃন্দ ও কলোনি বাজার দোকানদার সমিতি। ব্যবসায়ীদের এই পুজো হলদিয়া শহরের আদি পুজোগুলির অন্যতম। এবার ৫৪ বছরে পদার্পণ করেছে বাজার সমিতির পুজো। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সব ধর্মের ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে এই পুজোর আয়োজন করেন। সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। শিল্পশহরে থিমের পুজোর ভিড়ে বাজার সমিতির পুরনো পুজো তার সাবেকি ঐতিহ্য নিয়ে উজ্জ্বল। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে শহরের প্রাণকেন্দ্র দুর্গাচক নিউমার্কেটের সামনে প্রতিবছর জাঁকজমক করে পুজোর আয়োজন হয়। এদিন খুঁটিপুজো থেকেই সেই পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। সকালে ঢাকের বাদ্যি শুনেই খুঁটিপুজো দেখতে ভিড় জমান দোকানদার ও পথচলতি মানুষজন। সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। 

    এদিন খুঁটিপুজোয় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কাউন্সিলার প্রদীপ দাস, শ্রমিক নেতা সত্যশঙ্কর সাহু সহ ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট মানুষজন। খুঁটিপুজো উপলক্ষ্যে দুই শতাধিক আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা গাছের চারা বিতরণ করা হয়। শহর গড়ে ওঠার সময় সত্তরের দশকের গোড়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মিলিত হয়ে পুজো শুরু করেন। হলদিয়া শহরের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্র দুর্গাচকের কলোনি বাজার এলাকা। আশির দশকে সুপার মার্কেট ও নয়ের দশকে এখানে গড়ে ওঠে নিউমার্কেট। এই এলাকাতেই শহরের আদি ও নামী ব্র্যান্ডের বিপণি থেকে বাণিজ্যিক অফিস রয়েছে। দোকানদার সমিতি জানিয়েছে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ দোকান রয়েছে। কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মাইতি, সহ সভাপতি সত্যশঙ্কর সাহু বলেন, এবার পুজোর বাজেট ২০ লক্ষ টাকা। পুজোয় বাহ্যিক আড়ম্বরের চেয়ে সামাজিক কাজ, মানুষে মানুষে প্রীতির মেলবন্ধনে জোর দেওয়া হয়। পুজো কমিটির উপদেষ্টা থেকে শুরু করে কমিটির বিভিন্ন গুরুদায়িত্ব একসঙ্গে সামলান হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা।

    পুজো কমিটির সদস্য প্রতাপ মাইতি বলেন, সংস্থার সভাপতি কার্তিকচন্দ্র দাস অধিকারী কয়েক দশক ধরে প্রতিমা দান করে আসছেন। কলোনি বাজারের সাবেকি ধাঁচের দুর্গাপ্রতিমা গড়েন শহরের নামী শিল্পী নন্দলাল জানা। দালানকোঠা মণ্ডপ ও বিশাল ঝাড়বাতি এই পুজোর বৈশিষ্ট্য। সম্প্রীতির বাতাবরণেই পুজো কমিটির যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন উত্তম দাস অধিকারী ও শেখ সেকেন্দার আলি। তাঁরা বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও পুজোয় প্রতিবন্ধী মানুষ ও গরিব মানুষের পাশে থাকবেন ব্যবসায়ীবৃন্দ। এবার পুরসভার তালিকা অনুযায়ী দুর্গাচকের চার-পাঁচটি ওয়ার্ডের তিন শতাধিক প্রতিবন্ধী মানুষের হাতে ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য মশারি তুলে দিচ্ছি। এছাড়া গরিব মানুষের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দেব। অষ্টমীতে কয়েক হাজার মহিলা, পুরুষ পুষ্পাঞ্জলি দেন। তাঁদের জন্য লুচি-তরকারি ও ফলের ব্যবস্থা করা হয়। এবছর পুজোর বাজেট কাটছাঁট করে স্বাস্থ্য পরিষেবা, গরিব পড়ুয়াদের জন্য একটি তহবিল গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে বুকলেট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সহ সভাপতি সুকুমার সাহু, হরিপদ দাস বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ১০ হাজার মানুষকে দশমীর দিন খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানো হবে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)