নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: আজ, সোমবার ছাত্র সংগঠনের নামে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনে ছাত্রদের মোড়ক থাকলেও আদতে তা বিজেপির কর্মসূচি। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তা স্পষ্ট। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে পাঁচ হাজার কর্মী-সমর্থককে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। জেলায় তাদের সংগঠন নড়বড়ে। পাঁচ হাজার কর্মী এবং সমর্থক নিয়ে যাওয়ার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। জেলার ৫০০-৮০০জন পদ্ম শিবিরের লোকজন এদিন কলকাতা যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠবেন। সকাল থেকেই যাত্রা শুরু হবে। প্রত্যেকের হাতে জাতীয় পতাকা রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। বামেরা এই কর্মসূচিতে যাবে না মৌখিকভাবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এসএফআইয়ের কর্মী এবং সমর্থকরাও এদিন নবান্ন অভিযানে পতাকা ছাড়া শামিল হবেন বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তবে, সংগঠনের নেতারা আন্দোলনে শামিল হবেন না। কিন্তু নিচুতলার কর্মীরা ট্রেনে চড়ে কলকাতা যাবেন।
তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, রাম বাম মিলে রাজ্যে অশান্তি পাকাতে চাইছে। ওরা এদিন হাতে হাত ধরে কলকাতা যাবে। আর জি কর কাণ্ডের বিচার আমরাও চাই। কলকাতা পুলিস তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছিল। কেস এখন সিবিআইয়ের হাতে। তা সত্ত্বেও বিশৃঙ্খলা পাকিয়ে ওরা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। ওদের সঙ্গে জনসমর্থন নেই।
বিজেপি এসসি মোর্চার জেলা নেতা রাজু পাত্র বলেন, স্বর্তঃস্ফূর্তভাবে আমজনতা আন্দোলনে শামিল হবে। আমরা বিচার চাইতে যাব। এতে অন্যায় কিছু নেই।
অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মীরা যদি সত্যিই বিচার চান তাহলে তাঁরাও আন্দোলনে শামিল হবেন। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অর্নিবাণ রায়চৌধুরী বলেন, আমরা খুনের বিচার চাই। তবে, নবান্ন অভিযানে যাব না।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, এর আগেও রামের সঙ্গে বামেরা হাত মিলিয়েছিল। এবারের কর্মসূচিতে কোনও সংগঠনই দলীয় পতাকা ব্যবহার করবে না। বিজেপি একা আন্দোলন করলে তা ফ্লপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে বামেদের সহযোগিতা তারা পেতে চাইছে। গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, নবান্ন অভিযানে বর্ধমানের জুনিয়র চিকিৎসকরা যোগ দেবেন না। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগের মতোই অবস্থান বিক্ষোভ করবেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করলেও চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে না। ইমার্জেন্সিতে জুনিয়র চিকিৎসকরাও চিকিৎসা করছেন। বিচারের দাবিতে তাঁরা প্রথম দিন থেকে সোচ্চার হয়েছেন। তবে নবান্ন অভিযানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা পাকাতে তাঁরা রাজি নন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলা থেকে বিজেপির সঙ্গে বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা যাবেন। সব জেলা থেকে তাঁদের ট্রেনে চড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট ইতিমধ্যেই প্রতিটি জেলা থেকে নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেইমতো পুলিসও পদক্ষেপ নিচ্ছে।