• মনোহরপুর রাজবাড়ি ও কাকরাজিৎ মন্দির হেরিটেজ ঘোষণার দাবি
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বেলদা: দাঁতনের মনোহরপুর রাজবাড়ি ও কাকরাজিৎ মন্দিরকে হেরিটেজ ঘোষণার জন্য সরকারের কাছে দরবার করলেন বিধায়ক। তাঁর আবেদন জেলাশাসকের মারফত পৌঁছে গেল রাজ্যের কাছে। বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান গত ২১আগস্ট মনোহরপুর রাজবাড়ি ও কাকরাজিৎ মন্দিরকে হেরিটেজের আওতাভুক্ত করার জন্য জেলাশাসককে চিঠি পাঠান। ২২আগস্ট বিধায়কের এই প্রস্তাব বিবেচনার জন্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছেন জেলাশাসক। এরপরই আশার আলো দেখতে শুরু করেছে দাঁতনবাসী। দাঁতনের মনোহরপুর রাজবাড়ি বেশ পুরনো। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রাচীন ইতিহাস। দাঁতনের উত্তর রায়বাড়ে ষোড়শ শতাব্দীতে মনোহরপুর রাজাদের আধিপত্য ছিল। যার পথিকৃত ছিলেন আকবরের অন্যতম সেনানী মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডের লক্ষ্মীকান্ত উত্তর রাও তথা লছমিকান্ত উত্তর রাও। তিনি ১৫৭৫সালে মোগল-পাঠান যুদ্ধে মোগল শাসক আকবরের সেনাদলে অংশ নিয়ে বীরত্ব দেখিয়েছিলেন। তাই তাঁকে ‘বীরবর’ উপাধি দিয়েছিলেন আকবর। তবে দাঁতনের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী এলাকায় যুদ্ধ শেষে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে লক্ষ্মীকান্ত আর দেশে ফিরে যাননি। এখানেই বসতি গড়ে তোলেন। গড়ে ওঠে রাজবংশ। স্থাপিত হয় গড়বাড়ি। পরে মনোহরপুরে উঠে আসেন তাঁরা। এখানেই গড়ে ওঠে রাজাদের অট্টালিকা। সেই বাড়িতে এখনও অবস্থান করেন উত্তরসূরীরা। বাড়ির কিছু কিছু অংশ ভগ্নপ্রায়। এখানে ছিল তিনতল বিশিষ্ট নাট্যশালাও। ফলে এর সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। সেই ইতিহাস রক্ষার দাবি রয়েছে। কাকরাজিতেও আছে প্রাচীন মন্দির। একসময় দাঁতনের জেনকাপুরের রায় জমিদারদের জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল এই এলাকা। তাদের সময় গড়ে উঠেছিল মন্দির। এখন অবশ্য নতুন করে বিশাল মন্দির গড়ে উঠেছে। তবে অনেকেই মনে করেন কাকরাজিৎ হয়ে চৈতন্যদেব পুরী গিয়েছিলেন। এখানে চৈতন্যের বিগ্রহ আছে। বিধায়ক বলেন, এলাকা দু’টির গুরুত্ব আছে। বহু প্রাচীন ও দু’টি স্থাপত্য হেরিটেজের দাবি রাখে। এলাকার মানুষের দাবিকে গুরুত্ব দিতেই সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। বিধায়ক জানান, জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে আবেদন পৌঁছে গিয়েছে। দাবি পূরণের আশায় দিন গোনা শুরু করেছে দাঁতনের বাসিন্দারা।
  • Link to this news (বর্তমান)