• আবার চোখ রাঙাচ্ছে গঙ্গা, বাড়ল জলস্তর
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: জল বেড়েছে মানিকচকে। পরিদর্শনে গেলেন জেলাশাসক। সোমবার থেকে ভূতনি এলাকার বন্যা পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি ঘটে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত পুরোপুরি ভাবে জলের তলায়। প্লাবিত হয়েছে এই ব্লকের গোপালপুর উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রশাসনের তরফে বন্যা দুর্গতদের ২৫ হাজার ত্রিপল, ৯৩ কুইন্টাল চিঁড়ে, মুড়ি এবং ৩২ কুইন্টাল চাল ইতিমধ্যেই বণ্টন করা হয়েছে।  

    মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ৩৬টি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। ২৫টি স্বাস্থ্য ক্যাম্প করা হয়েছে। প্রত্যেকটি বাড়িতে ডায়ারিয়া প্রতিরোধ কিট দেওয়া হচ্ছে। পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য ৬২টি টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হচ্ছে। ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের সংযোগ জলের নীচে চলে যাওয়ায় ১৫টি জেনারেটারের সাহায্যে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।  সেচদপ্তরের ১০টি ডিজেল পাম্পসেট তৈরি রাখা হয়েছে। জলস্তর কমে গেলে স্লুইস গেট   খুলতেই পাম্প চালিয়ে জল বের করা হবে। ভূতনির একটি সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। পূর্তদপ্তরের সড়ক বিভাগ সেখানে কাজ শুরু করে দিয়েছে। 

    মানিকচক ঘাটে অনেক আগেই গঙ্গা বিপদসীমা পার করে গিয়েছে। এদিন গঙ্গার জলস্তর ছিল বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, গঙ্গার চরম বিপদসীমা ২৫.৩০ মিটার। সেখানে এদিন গঙ্গার জলস্তর বেড়ে দাঁড়ায় ২৫.২০ মিটার।  বন্যা পরিস্থিতিতে বিপন্ন মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এদিন সকাল থেকেই মানিকচকের বিডিও, মালদহ সদর মহকুমা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন জেলাশাসক। 

    অন্যদিকে ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির কারণে জলমগ্ন তিনটি অঞ্চল, যারমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত। জলবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় আট হাজার পরিবার। গত দু’সপ্তাহ ধরে এলাকায় জল জমে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তারমধ্যেই সেই দুর্গন্ধযুক্ত জলের মধ্যদিয়ে চলছে যাতায়াত। ভূতনির এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এদিন মানিকচকের মথুরাপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ফাঁকা ময়দানগুলি পরিদর্শন করেন জেলাশাসক। তিনি মানিকচকের বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন। বিডিওকে মাইকিং করে দুর্গতদের সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়। ব্লক স্বাস্থ্য অধিকারিককে জলে দুর্গন্ধ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়। 

    মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল বলেন, ভূতনির বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিহারে প্রবল বৃষ্টির কারণে গঙ্গার জল আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। এতে বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে পারে। সেজন্য দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণ কেন্দ্রগুলিতে রাখার ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)