• আজ কাদা খেলার মধ্যে দিয়ে বসুনিয়া বাড়িতে দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: আজ, মঙ্গলবার কাদা খেলা ময়নাগুড়ির বসুনিয়া বাড়িতে। কাদার খেলার সেই মাটি দিয়েই তৈরি হবে দুর্গা প্রতিমা। ১৮১০ সালে কোচবিহারের রাজা প্রাণ নারায়ণ রংপুর থেকে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎই শুরু হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সেই সময় তিনি চাপগড় পরগনায় চিলারায়ের গড়ে আসেন। বর্তমানে চাপগড় পরগনা ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাপগড় নামে পরিচিতি লাভ করে। সেসময় এলাকার ধনবর বসুনিয়া রাজদরবারে হিসেবরক্ষকের কাজ করতেন। 

    ধনবর বসুনিয়া রাজাকে তাঁর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। রাজা তাঁর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করেন। রাজ দরবারের হিসেবরক্ষক ধনবর বসুনিয়ার বাড়িতে রাজা দেবী দুর্গার প্রতিমা নিয়ে আসেন। সেখানেই হয় পুজো। অন্যদিকে, রাজদরবারে হয়েছিল ঘটপুজো। তখন থেকেই আমগুড়ির বসুনিয়া বাড়িতে দেবী দুর্গার পুজোর সূচনা হয়। 

    আমগুড়ির বসুনিয়া বাড়ির দুর্গাপুজো এবছর ২১৪ বছরে পড়তে যাচ্ছে। এখানে দেবীদুর্গা ঘরের মেয়ে বলে পূজিত হন। অন্যান্য দুর্গা প্রতিমার থেকে এই প্রতিমার গঠন একেবারেই আলাদা। এখানে প্রতিমার মুখে রয়েছে মঙ্গলীয় জনজাতির ছাপ। সাজসজ্জা মঙ্গলীয় জনজাতির আদলে। এই পুজো ঘিরে সমগ্র আমগুড়িবাসী পুজোর দিনগুলিতে আনন্দে মাতেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর লোকজনের আসে বসুনিয়া বাড়িতে। 

    আজ, মঙ্গলবার কাদা খেলা। কাদা খেলা বসুনিয়া বাড়ির স্থায়ী মণ্ডপের সামনে হবে। কচিকাঁচারা এই খেলায় অংশগ্রহণ করে। কাদা খেলার মাটি দিয়েই এখানে দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হবে। এই পুজোর সভাপতি সুনীল বসুনিয়া। তিনি বলেন, আমাদের এই পুজোর সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে আছে। নবমীর দিন আমরা মাত্রাপুজো করি। যেখানে ফলের সঙ্গে লাঙ্গল পুজো করা হয়। দশমীর দিন মন্ত্রের সাহায্যে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। পরবর্তীতে সেই লাঙ্গল দিয়ে জমিতে আড়াই পাক কর্ষণ করা হয়। সেদিন থেকেই রবিশস্যের সূচনা হয়। আমাদের প্রতিমা নিরঞ্জন হয় না। বংশপরম্পরা এই পুজো হয়ে আসছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)