• ১২৫ ডেসিবেলে ফিরছে চকোলেট বোমা, কালীপুজোয় শব্দে জব্দ রাজ্য
    বর্তমান | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: চকোলেট বোমা মানেই ‘শব্দ দানব’। সেই দানবের কারণে পশ্চিমবঙ্গে ‘শব্দ শহিদ’ হতে হয়েছে ১৩ জন মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে নিষিদ্ধ ছিল এই চকোলেট বোমা। এবার আবার কালীপুজোর রাতে তার শব্দে কানে তালা ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও অনেকের বক্তব্য, চোরাগোপ্তা চকোলেট আগেও ফেটেছে। এবার আইনি পথে বৈধতা পাওয়ায় তার মাত্রা তীব্র হবে। 

    এর পাশাপাশি গ্রিনবাজির তালিকাতেও ঢুকতে চলেছে চকোলেট। কারণ, গতবছর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দমাত্রার বাজি তৈরি করা যেত না। পরে তা ১২৫ ডেসিবেল করা হয়। তাই এ বছর ১২৫ ডেসিবেল শব্দমাত্রা পর্যন্ত চকোলেট বোমা তৈরি হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আর নিষিদ্ধ তালিকায় রইল না এই বোমা। যদিও সাধারণ মানুষ থেকে পরিবেশ প্রেমী-সকলেই বলছেন, ৯০ ডেসিবলের মধ্যেই থাকা উচিত শব্দমাত্রা। শিশু, অসুস্থ, বয়স্ক মানুষ তো বটেই এই শব্দের অত্যাচারের শিকার হতে হয় বাড়ির পোষ্য থেকে পশু-পাখিদেরও।

    কলকাতার রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিটের সুতানুটি ভবন কমিউনিটি হলে শুরু হয়েছে গ্রিন ফায়ার ক্র্যাকার অর্থাৎ আইন মেনে গ্রিনবাজি তৈরির প্রশিক্ষণ। উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এমএসএমই দপ্তর। প্রশিক্ষণে এসেছেন নিরি’র বিজ্ঞানীরা। তাঁরা ছ’দিন ধরে প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রথম পর্যায়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ২৫টি ব্লক থেকে ১৭০ জন প্রস্তুতকারক এসেছেন। নাগপুরে না গিয়ে কলকাতায় তাঁরা প্রশিক্ষণের সুযোগ নিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সারা বাংলা আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, ‘১২৫ ডেসিবেলের মধ্যে এবার চকোলেট বোমা বানাতে পারবেন। এই বোমার খরচ কম। লাভ বেশি। নিরি’র গাইডলাইন মেনেই তা বানাতে হবে। তা যেন ১২৫ ডেসিবেলের বেশি না হয়।’ পরে তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১২৫ ডেসিবেল সারা দেশে প্রযোজ্য। আগে আমাদের রাজ্যে ৯০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্দিষ্ট ছিল। এখন আমাদের রাজ্যেও ১২৫ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্দিষ্ট হয়েছে। ফলে চকোলেট বোমা তৈরিতে কোনও সমস্যা নেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক আধিকারিককে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি সঠিক বলতে পারব না। আপনি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে জিজ্ঞেস করুন।’ দূষণ নিয়ন্ত্রণের পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘একটু বাইরে আছি।’ এদিকে, বাজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর একেবারে শেষ পর্যায়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদই ১২৫ ডেসিবেল মাত্রা ঠিক করেছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘১২৫ ডেসিবেল শব্দ অনেক বেশি মাত্রার। ফলে ভালো চকোলেট বোমা তৈরি হবে।’ রাজ্যের সবুজ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক নব দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশে ১২৫ ডেসিবেল ছিল। আমাদের রাজ্যে ছিল ৯০ ডেসিবেল। এ রাজ্যে ১৩ জন শহিদ হয়েছেন। অন্য কোনও রাজ্যে তা হয়নি। তাই আমরা এখনও বলছি, ৯০ ডেসিবেলই রাখা উচিত। সেই সঙ্গে সমস্ত আইন মেনে গ্রিনবাজি তৈরি করা দরকার। যাতে তার আড়ালে বেআইনি কারবার না হয়।’
  • Link to this news (বর্তমান)