• ফাঁদ পাতা হচ্ছে, সাধারণের ভিড়ে মিশে গিয়ে ব্যাপক অশান্তির ছক দুষ্কৃতিদের, নবান্ন অভিযান নিয়ে সতর্ক করল পুলিশ
    আজকাল | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযান, উদ্যোক্তা হিসেবে নাম বলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের। ইতিমধ্যে বাম সংগঠনগুলি জানিয়েছে, এই আন্দোলনের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের পক্ষও থেকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে, আগামিকালের ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অশান্তির চেষ্টা করছে একদল। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই প্রসঙ্গে একগুচ্ছ বার্তা দিলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, আগামিকালের এই মিছিল আদতে সাধারণের জন্য ফাঁদ। তার পিছনে পরিকল্পনা ব্যাপক অশান্তির।

    মিছিলের ঠিক আগের দিন নবান্ন অভিযান নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করল পুলিশ। সাংবাদিক সম্মেলনে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এই নামে কোনও সংগঠনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ওই সংগঠনের সমাজমাধ্যম থেকে বেশকিছু তথ্য তুলে ধরেন তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনেই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। কবে সেটা? ২৭ আগস্ট, যেখানে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী দীর্ঘ প্রস্তুতির পর সর্বভারতীয় পরীক্ষায় বসতে চলেছে। ইউজিসি নেট পরীক্ষা আগামিকাল।‘ তিনি বলেন, সুদূর বা সাম্প্রতিক ইতিহাসে এই ধরনের কোনও উদাহরণ আমরা পাইনি, যেখানে বহু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর পরীক্ষার দিন কোনও ছাত্র-সমাজ আন্দলনের ডাক দিয়েছে। ছাত্র-স্বার্থ বিরোধী এই পদক্ষেপ কেন? প্রশ্ন তুলেছেন তা নিয়েও।

    এডিজি দক্ষিণবঙ্গ জানান, বিশ্বস্তসূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, এই আন্দোলনের মূল সংগঠক, গতকাল শহরের এক পাঁচতারা হোতেলে এক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেন। ওই সাক্ষাতের সামগ্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং আদালতে পেশ করা হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আমরা সূত্রে খবর পেয়েছি, আগামিকালের নবান্ন অভিযানে, সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়ে কিছু দুষ্কৃতি ব্যাপক গণ্ডগোল, অশান্তি, হিংসা, বিশৃঙ্খলা ছড়াতে পারে। আমরা এটাও জেনেছি ভিড়ের সামনে মূলত মহিলা-ছাত্রছাত্রীদের রেখে পিছন থেকে এমন কিছু গোলমাল পাকানো হবে, এমন কিছু প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা হবে, যাতে পরিস্থিতি নিমেষে বিশৃঙ্খল-হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, এবং পুলিশ বাধ্য হয় বল প্রয়োগ করতে। সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ন আন্দোলনের আবেগকে কাজে লাগিয়ে, একদল দুষ্কৃতি এই অশান্তি-হিংসা-বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে।‘ নেপথ্যে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা ঘটনাস্থলে না থাকতে পারেন বলেও মত এডিজি দক্ষিণবঙ্গের। সমাজমাধ্যমের একাধিক ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতিদের ফাঁদে পা না দেওয়ার বার্তা দেন তিনি।

    সাফ জানান, ‘সাধারন মানুষের নিরাপত্তার থেকে বড় অগ্রাধিকার রাজ্যসরকারের কিছু নেই।‘ পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ এবং সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে যে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে, দুটিই সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বেআইনি, কারণ ব্যাখ্যা করে সাফ জানাল পুলিশ। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ জানান, দুই সংগঠনকেই সমাবেশ সম্পর্কিত বিশদ তথ্য জানাতে বলেছিল, উদ্যোক্তারা সেসব তথ্য জানায়নি, আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমত চাওয়া হয়নি বলেও জানান। তাঁর মতে এটা বেআইনি। একই সঙ্গে নবান্ন এবং তার সংলগ্ন এলাকা যে একসঙ্গে ৫ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ, তাও সাফ জানান তিনি। সঙ্গেই জানান, রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে মিছিল শান্তিপূর্ণ হওয়ার সমগ্র ব্যবস্থা পুলিশ প্রতিনিয়ত করছে বলেও জানান তিনি।
  • Link to this news (আজকাল)