সুব্রত বিশ্বাস: ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) মূল দাবি ছিল এটাই। ছাত্রদের ডাকে এই অভিযানে হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে জড়ো হন শহরতলির বেশ কয়েক হাজার মানুষ। সকলের গন্তব্য নবান্ন। আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার সুবিচার চেয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজে’র ডাকে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁরা সকলেই অংশ নিয়েছেন। কিন্তু সত্যিই কি সুবিচারের প্রতিবাদে শামিল তাঁরা নাকি গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো স্রেফ? হাওড়া স্টেশনের বাইরের ছবিটা সেই প্রশ্ন তুলে দিল। সেখানে দেখা গেল, আর জি কর কাণ্ডের (RG Kar Hospital) প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানে যাওয়ার পথে অনেকেই ব্যস্ত সেলফি তুলতে!
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হাওড়া (Howrah) স্টেশনে জমায়েত হতে থাকে। কয়েকজনকে স্টেশনের বাইরে বের করে দেয় পুলিশ। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযানকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেলা সাড়ে বারোটা থেকে ১.১৫ পর্যন্ত নিউ ও ওল্ড দুই স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় জমায়েত ও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে দুই স্টেশন থেকে যাতায়াতকারী যাত্রীরা চরম অসুবিধার মধ্যে পড়েন। এমনকী সড়কপথে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু মুখে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান থাকলেও হাওড়া স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেলফি (Selfie) তুলতে। আর জি কর ইস্যুতে প্রতিবাদে যে তাঁরা শামিল, সোশাল মিডিয়ায় তা না দেখালে কি হয়? আর তার অব্যর্থ প্রমাণ এই সেলফি। সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) সেই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই স্পষ্ট, যত না প্রতিবাদ, তার চেয়ে বেশি নিজেকে প্রতিবাদী হিসেবে প্রমাণ করার তাগিদ কাজ করেছে অংশগ্রহণকারীদের একটা বড় অংশের। এমনিতেও আর জি কর কাণ্ডে সোশাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা হয়েছে। নবান্ন অভিযান নিয়েও কম কাটাছেঁড়া হয়নি। এবার হাওড়া স্টেশনের বাইরের এসব ছবি কার্যত আরও স্পষ্ট করে দিল যে প্রতিবাদ আসলে অন্তঃসারশূন্য।