• অনলাইনে রমরমিয়ো বিকোচ্ছে তালের পেস্ট
    এই সময় | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: ঝুড়ি উপুড় করে তালের গোলা ঘষে পেস্ট তৈরির দিন আর নেই। মিষ্টির দোকানে রেডিমেড তালের বড়ার স্বাদে মন ভরে না। গ্রামীণ এলাকায় মা-ঠাকুমাদের অনেকে তাল-ঘষে বড়া তৈরি করলেও শহরের ছোট পরিবারে এই কাজ করার লোক অমিল। এমন ‘হারকিউলিয়ান টাস্ক’ করেছেন নদিয়ার কল্যাণীর এক ব্যবসায়ী। সঙ্গী তাঁর ছেলে। তিলকে তাল করার গল্প নয়! অনলাইনে ‘তালের পেস্ট’ বিক্রিরও ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা।নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা কেশব কর। কারিগরি জগতের লোক বলেই জেলা ও জেলার বাইরের মানুষ তাঁকে এক ডাকে চেনেন। ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি, মেশিন খারাপ হলে মেরামতির জন্য তাঁর ডাক পড়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। দু’বছর আগে হঠাৎ করে বাঁকুড়া থেকে খেজুরের রস ও গুড় কিনে এনে বরফি তৈরি করেন তিনি।

    খেজুর গুড়ের সেই মিষ্টি হটকেক হয়। এ বার ভাদ্র মাসের পাকা তাল দিয়ে পেস্ট বানিয়ে প্যাকেটজাত শুরু করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘ছেলে অরিত্র এই ব্যবসা শুরু করেছে। গাইড হিসেবে ও মার্কেটিংয়ে আমি সহযোগিতা করছি।’

    কী ভাবে তৈরি হচ্ছে তাল-পেস্ট? নদিয়া, বর্ধমান জেলার তুলনায় অনেক কম দামে পাকা তাল পাওয়া যায় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও মেদিনীপুরে। ওখানে এক একটা পাকা তাল দশ টাকা। স্থানীয় কৃষি সমবায় সমিতি সরবরাহ করেছে সেই তাল। ধাতব ঝাঁঝরায় তাল ঘষার কাজ করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তালের ওই পেস্ট ছেঁকে আঁশগুলো বের করে অল্প চিনি দিয়ে ফোটানো হয়।

    কেশবের দাবি, ‘প্যাকিংয়ের আগে তালের পেস্টের মধ্যে কোনও প্রিজ়ারভেটিভ দেওয়া হয় না। তবে প্যাকিং বা কনটেনারে ভর্তি করার আগে ওই নির্যাসকে রিটোর্ট মেশিনে জীবাণুমুক্ত করতে হয়।’

    ২৫০ গ্রামের তালের পেস্ট খুচরো ৫০ টাকা, পাইকারি ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অরিত্র। কল্যাণী শহরে হোম ডেলিভারি, বাইরে ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। জানা গিয়েছে, চারটে বড় তাল থেকে এক কেজি পেস্ট হয়।

    কল্যাণীর ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘তাল কেনা, গাড়ি ভাড়া, তাল ঘষার মজুরি, প্যাকেজিং বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়। লাভ যে খুব একটা হচ্ছে তা নয়। তবু খাদ্যরসিক বাঙালির কাছে আমাদের এই নতুন উদ্যোগ।’
  • Link to this news (এই সময়)