আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা মিছিলে মোমবাতি হাতে হাঁটলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা মণ্ডল রাউত। পাড়া-পড়শিদের সঙ্গে রবিবার রাতে মিছিলে হাঁটার পরে অনিতা বলেন, “মহিলাদের একটা ক্ষোভ আছে একটা টের পাচ্ছি। তবে আমি দলগত ভাবে নয়, ব্যক্তি হিসেবে মিছিলে এসেছি। আর জি করে যা হয়েছে তা খুবই খারাপ, আমরা বিচার চাই।”
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মহিলাদের ক্ষোভ ‘টের’ পাচ্ছেন তৃণমূলের অনেক নেত্রীই। প্রতিবাদ করতে গেলে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের উপভোক্তা থাকার দরকার নিয়ে তৃণমূল নেতাদের একাংশের মন্তব্য, সে ক্ষোভ বাড়িয়েছে বলেও মনে করছেন নেতারা। সে ক্ষোভের মোকাবিলা করতে আপাতত পাড়া-বৈঠক ছাড়া, কর্মসূচি নেই তৃণমূলের। সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীদেরই একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, নেতা-নেত্রীরা চুপ কেন! নেতাদের একাংশের দাবি, দলের সাম্প্রতিক ‘নীরবতা’ ধীরে ধীরে মহিলাদের ক্ষোভ বৃদ্ধি করাচ্ছে।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জলপাইগুড়ি শহর-গ্রামে প্রতিবাদ চলছে। গত রবিবার পাহাড়পুরের রাস্তায় মিছিলে নেমে পড়েছিলেন তৃণমূলের প্রধানও। সে মিছিলে হেঁটেই তিনি ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন। জলপাইগুড়ি শহরের মিছিলেও হেঁটেছেন তৃণমূলের অনেক নেত্রীই। রবিবারে জলপাইগুড়ি মিছিলে মহিলাদের উপিস্থিতি ছিল অনেক বেশি। তৃণমূলের একাংশের দাবি, সাধারণ মহিলাদের মিছিলে নেমে পড়া দলের পক্ষে ভাল ইঙ্গিত নয়। সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা ভোটে তৃণমূল হারলেও, গ্রামাঞ্চলে ভোট বেড়েছিল। এই ভোট বৃদ্ধি ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের কারণেই বলে অনুমান অনেক বিশেষজ্ঞের। আর জি কর-কাণ্ডে মহিলাদের ক্ষোভ ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর কারণে আসা সেই বাড়তি ভোটে থাবা বসাতে পারে বলেও আশঙ্কা। বিশেষ করে, গ্রামের কয়েকটি মিছিলে ছাত্রীদের হাতের পোস্টারে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের উল্লেখ দেখা গিয়েছে। মহিলা তৃণমূলের জেলা কমিটির এক সদস্যার কথায়, “আমাদের দলের অনেকেই সাধারণ মহিলাদের ক্ষোভের কথা বলেছে। আমরা দলকে জানিয়েছি।”
জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী নূরজাহান বেগম বলেন, “আমরাও আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চাই। দলের কর্মসূচিও হয়েছে। আমাদের এখন পাড়ায়-পাড়ায় বৈঠক চলছে। দলের কর্মসূচির অপেক্ষায় রয়েছি। নির্দেশ এলেই কর্মসূচি হবে।” জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতাও চাইছেন ফের আর জি কর-কাণ্ডে দলের কর্মসূচিতে পথে নামতে। এক জেলা নেতার কথায়, “ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে। এখনই দল সর্ব স্তরে আর জি কর নিয়ে সরব না হলে, ভোটে প্রভাব পড়তেই পারে।”