• প্রতিষ্ঠা দিবসে ভিড় বাড়ানোর পরীক্ষায় নেমেছে টিএমসিপি
    আনন্দবাজার | ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • আর জি করে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজ্য উত্তাল। প্রতি দিনই রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদেও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। কোনও কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যেমন স্লোগান উঠছে, তেমনই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান উঠেছে। বহু সাধারণ মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী এই সব কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। এই আবহে বুধবার, ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ অন্য নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। মুর্শিদাবাদ থেকেও শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্রপরিষদের নেতাকর্মীরা কলকাতার ওই কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাবেন। আর জি করের ঘটনার পর যে ভাবে রাজ্য সরকার এবং শাসকদলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ স্লোগান শুরু হয়েছে তাতে এই জেলা থেকে পর্যাপ্ত কর্মীসমর্থক কলকাতায় যাবেন তো সেই প্রশ্ন উঠেছে।

    তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নাজমুল মিঞা বলেন, ‘‘আমাদের পাশ থেকে কেউই দূরে সরে যাননি। সাধারণ মানুষের দাবি আর জি করে চিকিৎসক পড়ুয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে। আমাদেরও একই দাবি। আমরাও দোষীদের ফাঁসি চাই। আমাদের রাজ্যের পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত নেমে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আদালতের নির্দেশে সিবিআই মামলার তদন্তভার পেলেও আজ পর্যন্ত তাদের হাতে কেউ গ্রেফতার হয়নি। আমরাও জানতে চাই তদন্তের গতিপ্রকৃতি কী? ফলে সাধারণ মানুষ আমাদের পাশ থেকে দূরে সরে যাননি।’’

    তাঁর দাবি, ‘‘বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা থেকে দশ হাজার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিতে কলকাতায় যোগ দিতে যাবেন। আমাদের সমর্থন যে কমেনি সেটা আগের দিন বহরমপুর সহ জেলার বিভিন্ন রেল স্টেশনগুলিতে নজর রাখলেই আপনারা দেখতে পাবেন।’’

    তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা দাবি করেছেন, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ১০ হাজার কর্মী সমর্থক বুধবারের কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাবেন। মঙ্গলবার থেকেই তাঁরা কলকাতামুখী হবেন। মঙ্গলবার দিনভর এবং বুধবার সকালে ভাগীরথী এক্সপ্রেস ট্রেন ধরেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বহু কর্মী সমর্থক কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাবেন। সেই সঙ্গে ডোমকল, জলঙ্গি, রানিনগর, কান্দির মতো যে সব এলাকায় ট্রেন যোগাযোগ নেই সেই এলাকা থেকে বহু ছাত্র-ছাত্রী বাসে করে, ছোট গাড়ি করে কলকাতায় যাবেন। আগের দিন কলকাতার আলিপুরে মুর্শিদাবাদের ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানেই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘এ বারে আমাদের জেলা থেকে বহু সংখ্যক ছাত্রীও এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাবেন। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি প্রায় ৫০০ জন মতো ছাত্রী কলকাতার জমায়েতে যোগ দেবেন।’’

    আর জি কর ইস্যুতে শহরগুলিতে যতটা প্রভাব পড়েছে, গ্রামে ততটা পড়েনি। সেটাই টিএমসিপি নেতৃত্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাম থেকে যত বেশি সম্ভব ছাত্রছাত্রী নিয়ে যেতে চান তাঁরা।

    গ্রামীণ এলাকা থেকেও বহু কর্মী সমর্থক কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন। নওদা ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সাহুল খান বলেন, ‘‘আমাদের ব্লক থেকে প্রায় ৫৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাবেন। বাসে এবং ট্রেনে করে তাঁরা যাবেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আর জি কর নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষও দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন, আমরাও অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। তবে আমাদের পাশ থেকে কেউ সরেনি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)