• ছাত্রসমাজের নামে নবান্ন অভিযানে বৃদ্ধ-মাঝবয়সি
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: লম্বা সাদা দাড়ি। পরণে লাল পোশাক। টিভির স্ক্রিনে প্রতিবাদী ওই বৃদ্ধের মুখ ভেসে উঠতেই অবাক নেটিজেনরা। মুহূর্তের মধ্যেই স্ক্রিনশট ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অধিকাংশের প্রশ্ন, কোন ক্লাসের ছাত্র উনি? ছাত্র সমাজের নামে আন্দোলনের জেরে নবান্ন অভিযানে রাজপথ দখল নিল মাঝবয়সি থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ছবি তুলে ধরে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া? কেউ কেউ কটাক্ষ করে লিখছেন, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া। আবার কেউ লিখছেন, সবে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়েছেন। নেটিজেনদের কেউ কেউ আন্দোলনকে সমর্থন করলেও আন্দোলনে অনেকের উপস্থিতি তুলোধনা করেছেন। এমনকী যে ছাত্র সমাজ এদিন পথে নামার ডাক দিয়েছিল, তারাই অনেকে আন্দোলন থেকে সরে এসেছে বলেও অভিযোগ করে অনেকে। তার বদলে এই বয়স্ক ও মাঝবয়সিদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন নেটিজেনরা।

    মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া এলাকার এক যুবক সামিম রহমান সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনজন বৃদ্ধ ও মাঝবয়সি ব্যক্তির মুখ পোস্ট করে বলেছেন, সবে ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হওয়া ছাত্র। সামিম বলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তার ধিক্কার জানিয়ে আমারও প্রতিবাদ করছি। তবে এদিন ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের নামে মাঝবয়সি থেকে বয়স্করা যেভাবে রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করল, তাদের আমরা সমর্থন করছি না। 

    এদিকে এদিনের আন্দোলন সম্পূর্ণ বিজেপির তৈরি করা নৈরাজ্য ছিল বলেই দাবি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলার তৃণমূল নেতাদের দাবি, এই আন্দোলন করে বিজেপি বাংলাদেশের মতো একটা আবহাওয়া তৈরি করতে চেয়েছিল এই বাংলায়। কিন্তু পুলিস কৃতিত্বের সঙ্গে সেই আন্দোলন রুখে দিয়েছে। পাল্টা বিজেপির দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে গেরুয়া শিবিরের অনেক নেতাকর্মীকে এদিন এই আন্দোলনে দেখা গিয়েছে। তাঁরা এই নবান্ন অভিযানের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে ট্রেনে আগেভাগেই কলকাতায় গিয়েছিলেন। 

    বহরমপুরে বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, আমাদের সাংগঠনিক জেলা থেকে অনেক নেতাকর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে নবান্ন অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য আগেভাগে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। তাঁরা সকলেই এদিন রাজপথে নামেন। আমরা সকলেই ছাত্রদের সঙ্গে এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। আরজি করের নির্যাতিতার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে এই আন্দোলন। 

    বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, আন্দোলন করেই আমাদের নেত্রী ক্ষমতায় এসেছেন। তবে সেই আন্দোলন একেবারে মানুষের আন্দোলন। আজ বিজেপি যেভাবে ছাত্রদের আন্দোলন দখল করতে নখ দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ল, তাতে নিন্দার ভাষা নেই। আমারও চাই নির্যাতিতার পরিবার সুবিচার পাক। দোষীরা কড়া শাস্তি পাক। তদন্ত এখন করছে সিবিআই। বিজেপি এখন তো নিজেদের তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করছে।
  • Link to this news (বর্তমান)