• ব্যস্ত সময়ে কাটোয়া থেকে ৭ ঘণ্টা বর্ধমানের কোনও ট্রেন নেই, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা, উদাসীন রেল
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: সকাল ৮টা ৫০মিনিটের পর সাত ঘণ্টা কাটোয়া স্টেশন থেকে বর্ধমানের কোনও ট্রেন নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বাসে চেপেই বর্ধমান যেতে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বারবার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। রেলের বিরুদ্ধে চরম ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। রেলের উদাসীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। বর্ধমান থেকে কাটোয়ার আরও দু’জোড়া ট্রেন চালানোর দাবিতে সরব হয়েছে যাত্রীদের সংগঠন। কাটোয়া স্টেশনের ম্যানেজার কল্যাণ সেন বলেন, যাত্রীরা লিখিতভাবে ট্রেন বাড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন। যাত্রীদের দাবির কথা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

    সকালে ৮টা ৫০মিনিটে বর্ধমানের একটি লোকাল ট্রেন ছাড়ে। এর পরের ট্রেন প্রায় ৭ ঘণ্টা পর। বিকেল ৪টে ১০মিনিটে ওই ট্রেনটি ছাড়ে। অর্থাৎ দুই ট্রেনের মধ্যে সাত ঘণ্টা ২০ মিনিটের ব্যবধান রয়েছে। সেকারণে বহু যাত্রী বর্ধমানে যেতে পারেন না। বাধ্য হয়ে তাঁরা বাস ধরেন। ওই সময় অন্তত দু’জোড়া ট্রেন চালানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪সালে বর্ধমান থেকে বলগনা ব্রডগেজ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল। পরের বছর থেকে বলগোনা-কাটোয়া পর্যন্ত ২৬.২২ কিমি রেলপথের গেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। ২০১৭সালে বর্ধমান থেকে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত এক জোড়া ইএমইউ রেক চালু হয়। ২০১৮সালে কাটোয়া-বর্ধমান শাখায় মোট ছ’জোড়া ট্রেন চালু হয়। 

    কিন্তু যাত্রীদের দাবি, এই ট্রেন যথেষ্ট নয়। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। কাটোয়া থেকে বর্ধমান প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। অনেকে অফিসে যান। কাটোয়া থেকে টানা সাত ঘণ্টা বর্ধমানের কোনও ট্রেন থাকে না। অন্যদিকে বর্ধমান থেকে সকাল ৯টা ৩৫মিনিটের পর দুপুর ২টো আর সন্ধ্যা ৬টা ৩০মিনিটে ট্রেন ছাড়ে। মাঝে সময়ের ব্যবধান অনেক বেশি। এইসময় যাত্রীদের ব্যাপক চাপ থাকে। সেকারণে যাত্রীদের হয়রানি আরও বাড়ে। তাই অফিস টাইমে ট্রেন আরও বাড়ানোর দাবিতে সরব হয়েছেন যাত্রীরা। অনেকে কাজের জন্য কাটোয়া থেকে আসানসোল যান। সঠিক সময়ে ট্রেন বর্ধমানে না ঢোকায় তাঁরা ট্রেন ধরতে পারেন না। 

    পাশাপাশি কাটোয়া থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে ও বর্ধমানের অফিস আদালতে যান। তাঁরাও সঠিক সময়ে ট্রেন না পেয়ে বাসের উপরই ভরসা করেন। নিত্যযাত্রী নিতাই প্রামাণিক, সুবল হাজরা বলেন, আমরা এর আগে ডিআরএমকেও জানিয়েছি চিঠি দিয়ে। কিন্তু রেল আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। আমাদের অফিস যেতে হয় বর্ধমানে। সঠিক সময়ে ট্রেন পাওয়া যায় না। তাই আমাদের আগে থেকেই ট্রেন ধরতে হয়। আবার ফিরে আসার সময় বর্ধমানে বাস ধরতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ দিনই ভিড়ের ঠেলায় বাসে উঠতে পারি না। বাদুড়ঝোলা হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। কাটোয়া-বর্ধমান শাখায় অন্তত দু’জোড়া ট্রেন বাড়ানো হোক।
  • Link to this news (বর্তমান)