• শহরে রাতে বুলডোজার দিয়ে প্রতীক্ষালয় ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: রাতের অন্ধকারে বুলডোজার দিয়ে যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙে ফেলল দুষ্কৃতীরা। পুরুলিয়া শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রাঘবপুরের ঘটনা। মঙ্গলবার সকালে ভাঙা যাত্রী প্রতীক্ষালয় দেখে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি, কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস, টাউন থানার আইসি প্রমুখ। কে বা কারা ভাঙল তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। তবে, এর পিছনে প্রমোটার চক্রের হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত পুরসভার চেয়ারম্যানের।

    পুরুলিয়া পুরসভা সূত্রে খবর, রাঘবপুর মোড়ে ২০০৩ সালে পুরুলিয়া পুরসভার উদ্যোগে যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি তৈরি করে রোটারি ক্লাব। তা  দেখভাল করত পুরসভাই। সোমবার রাতে রীতিমতো বুলডোজার দিয়ে সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাঘবপুর মোড়কে শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র বলা যায়। সারারাত এই রাস্তা দিয়ে মানুষজন যাতায়াত করে। পুলিস পেট্রলিং তো আছেই। থানা থেকে দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। এরকম একটা ব্যস্ততম এলাকায় এধরনের ঘটনা ঘটল কী করে? পুলিস কী করছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন বাসিন্দারা।

    পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতীক্ষালয়ের পিছনে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি রয়েছে। জমিটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আছে। সেই জমি এখন শহরের এক বড় ব্যবসায়ীর কব্জায়। সেখানে ফ্ল্যাট তৈরির তোড়জোড় হচ্ছে বলে খবর। সেই জমিতে প্রবেশের জন্য সামনের দিকে একটি ছোট দরজাও রয়েছে। কিন্তু প্রবেশপথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতীক্ষালয়টি। চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালির বিস্ফোরক অভিযোগ, আগে আমাদের কাছে বিভিন্নভাবে প্রতীক্ষালয়টি সরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব এসেছিল। ভেঙে দেওয়ার পর সেই বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে। চেয়ারম্যানের অভিযোগ, এটি শহরের অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা জেসিবি নিয়ে এসে ভাঙল, অথচ পুলিস পেট্রলিংয়ের গাড়ির নজরে পড়ল না? আমি পুলিসকে বলব সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। 

    কাউন্সিলার বিভাস দাস বলেন, পুরুলিয়া শহরের বুকে এরকম দাদাগিরি বরদাস্ত করা হবে না। ওই জায়গাতেই কীভাবে ফের প্রতীক্ষালয়টি তৈরি করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে। 

    যদিও বিরোধীরা এর পিছনে তৃণমূলের নেতাদের জড়িত থাকারই অভিযোগ তুলেছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা পুরুলিয়ার বিজেপির বিধায়ক সুদীপকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, সরকারি সম্পত্তি কেউ চাইলেই ভেঙে ফেলতে পারে? আসলে যে রক্ষক, সেই ভক্ষক। পুলিস, তৃণমূল, প্রমোটার সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। শাসক দলের নেতারা ও পুলিস প্রমোটারের থেকে টাকা খেয়ে এসব করেছে। 

    পাল্টা তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের দল এসব সমর্থন করে না। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থার অনুরোধ করব পুলিসকে।
  • Link to this news (বর্তমান)