• দার্জিলিং মেলে সংঘর্ষ টিএমসিপির ২ গোষ্ঠীর
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: চলন্ত ট্রেনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হলেন চারজন। তাঁদের মধ্যে একজনের মাথায় কাঁচি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ির বাসিন্দা জখম চারজনকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে ডাউন দার্জিলিং মেলে এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্য যাত্রীরা।

    ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রত্যেক বছরই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এই দিনটি পালন করে টিএমসিপি। সেই সমাবেশে যোগ দিতে সোমবার রাত থেকেই উত্তরবঙ্গ থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা দলে দলে কলকাতামুখী হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং মেল ধরে কলকাতার দিকে আসছিলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, মধ্য রাতে ট্রেনটি মালদহ স্টেশন ছাড়ার পরই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বেধে যায়। এক টিএমসিপি কর্মীর মাথায় কাঁচি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মাথা দিয়ে রক্ত বেরতে থাকে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরা। সহকর্মীরা মাথার ক্ষতস্থানে গামছা দিয়ে চেপে ধরেন। কিন্তু ট্রেনটির পরবর্তী স্টপেজ ছিল রাত ২টো ১৫মিনিটে বোলপুর শান্তিনিকেতন স্টেশনে। ততক্ষণে অনেকটাই রক্ত বেরিয়ে প্রাণ সংশয় হতে পারত। তাই রামপুরহাট জংশন ঢোকার আগে ২৩ নম্বর এলসি গেটে ট্রেনটির গতিবেগ কমলে জখমরা নেমে পড়েন। সেখান থেকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জখমদের নিয়ে আসা হয়। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখমদের নাম ফিরোজ আলম, সৌরভ চক্রবর্তী, শঙ্কর রায় ও ইয়াসিন আলি। তাঁদের মধ্যে শঙ্কর রায়ের মাথায় কাঁচি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর মাথায় কয়েকটি সেলাই পড়েছে। বাকি তিনজনের মাথায় ব্যথা থাকলেও আঘাত গুরুতর নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, জলপাইগুড়ির দু’জন নেতা দিগন্ত রায় ও দেবজিৎ সরকার ওরফে ডিস্কো টিএমসিপির রাজ্য এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য। দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমরা দিগন্ত রায়ের অনুগামী। দু’পক্ষই নিজের নিজের অনুগামীদের নিয়ে এই ট্রেনে উঠেছিল। আমরা জেনারেল কামরায় ছিলাম। মালদহ ছাড়ার পর হঠাৎই ডিস্কোর অনুগামীরা এসে দিগন্তদার সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে। বচসার মধ্যেই ওরা আক্রমণ করে। কলকাতায় না গিয়ে জখমদের পাশে থেকেছেন দিগন্ত রায়। যদিও এব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ আছে। এটা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কিছু বলা যাবে না। 

    দেবজিৎ সরকার অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, দলে আমার নাম খারাপ করার চেষ্টা করা হতে পারে। আমাদের পাশাপাশি নবান্ন অভিযানের জন্য বিজেপির বহু লোক এই ট্রেন ধরে কলকাতায় আসছিল। প্রথম থেকেই ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। অনেকের পুলিসের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছিল। সেই ভিড়ের মধ্যে কেউ বা কারা হয়তো ওদের আঘাত করতে পারে। ট্রেনে শঙ্করের প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি রামপুরহাট মেডিক্যালের ইমার্জেন্সিতে ফোন করে ব্যবস্থা করি। শঙ্করের চিকিৎসার জন্য কিছু টাকাও পাঠিয়েছি। যদিও বিজেপির বীরভূম জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল বলেন, ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপা দিতে বিজেপির নাম করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)