• ঝোপ বুঝে কোপ, গঙ্গা পারাপারে ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছেন নৌকাচালকরা, ক্ষোভ
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: অনেকের সর্বনাশ, কারও পৌষ মাস। এমনই ছবি দেখা গেল মানিকচকের ভূতনিতে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে সড়কপথে ভূতনির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা। এই সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ নৌকাচালকদের বিরুদ্ধে।

    সোমবার রাতে যাত্রী প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়া নেওয়ার খবর পেতেই ভূতনি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে মাঝিদের সঙ্গে কথা বলেন মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কড়া শাস্তি নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

    ভূতনিতে গঙ্গা নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন কয়েকদিন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর চণ্ডীপুর, খোসবরটোলা এলাকার প্রতিটি বাড়িতে জল ঢুকেছে। বানভাসিরা বিভিন্ন এলাকায় উঁচু স্থান, বাড়ির ছাদ বা ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় ভূতনি থেকে কয়েক হাজার মানুষ মানিকচক আসার ক্ষেত্রে নৌকা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। সুযোগ বুঝে একাংশ নৌকা চালক অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। যাত্রীর সঙ্গে বাইক বা ভারী সামগ্রী থাকলে ভাড়া চাওয়া হচ্ছে দু’শো টাকা। অল্প নদীপথ পার হতে এতো টাকা দিতে হওয়ায় মাঝেমধ্যে দুর্গতদের ক্ষোভ বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা নৌকা চালকদের সঙ্গে বচসায় জড়াচ্ছেন।

    প্রশাসনের দেওয়া নৌকার পরিষেবা নিয়েও ক্ষিপ্ত দুর্গতরা। প্রভাবশালীদের দাপটে তাঁরা পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন অনেকে। গিরিটোলার বাসিন্দা লালবাহাদুর মণ্ডলের অভিযোগ, প্রশাসনের দেওয়া নৌকা থাকলেও সেটি ব্যবহার করছেন শুধুমাত্র পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্য  এবং প্রশাসনিক কর্তারা। বিপদে পড়া সাধারণ মানুষের কোনও জায়গা নেই সেই নৌকায়। রোজগার না থাকলেও এখন বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছি। আমাদের পাশে কেউ নেই।

    তবে, বেশি ভাড়া নেওয়ার মধ্যে অন্যায় কিছু দেখছেন না নৌকা চালকরা। তাঁদের মধ্যে যোগেশ মণ্ডল বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী পারাপারে নির্দিষ্ট ভাড়ার কথা জানানো হয়নি। 

    রাতে এলাকা পরিদর্শনের পর অভিযোগ প্রসঙ্গে মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের মন্তব্য, দুর্গতদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া বরদাস্ত করা হবে না। ফের এরকম কাজ করলে নৌকা চালকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এবার থেকে প্রশাসনের ঠিক করে দেওয়া ভাড়া দেবেন সবাই। নিয়ম না মানলে নৌকা চালাতে দেওয়া হবে না। সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য প্রশাসন বাড়তি নৌকা দেবে বলেও জানিয়েছেন বিধায়ক।
  • Link to this news (বর্তমান)