• হাতুড়ে ও হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের কাছে ভিড় বাড়ছে দুঃস্থ রোগীদের
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: আর জি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তার ও পিজিটিদের টানা কর্মবিরতি চলছে। এতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরা নাজেহাল হচ্ছেন। কর্মবিরতির ফলে সেখানে চিকিত্সক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আউটডোরের সামনে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ ক্রমশ বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে জরুরি বিভাগ নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে গ্রাম ও আধা শহুরে এলাকায় হাতুড়ে ও হোমিওপ্যাথির চেম্বারে দুঃস্থ রোগীদের ভিড় বাড়ছে। গরীব মানুষ এভাবে সরকারি হাসপাতাল বিমুখ হয়ে পড়ায় জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা সময় মতো ডেঙ্গু সংক্রমণ নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যাপারে চিন্তিত।  গত প্রায় ২০ দিন ধরে হয়রানির জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দু’হাজারের সামান্য বেশি টিকিট কাটা হয়েছে। যা অন্য সময়ে দিনে গড়ে চার হাজার হয়।

    এদিকে অসুস্থ শরীরে দূরদুরান্ত থেকে ঠিকমতো ডাক্তার দেখাতে না পেরে অধিকাংশই ক্ষোভ, হতাশা নিয়ে  ফিরে যাচ্ছেন। অনেকের অভিযোগ, ডাক্তার ঠিকমতো দেখছেন না। রোগীর থেকে সমস্যা না শুনে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। মঙ্গলবার মেডিক্যালের স্কিন আউটডোরে ইসলামপুর থেকে এসেছিলেন তিরাবউদ্দিন। তার পেট ও গোটা শরীরে ফোড়ার মতো হয়ে চুলকানি হচ্ছে।   ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের কাছে পৌঁছানোর পর বলেছি, আমার পেটে ও শরীরে চুলকানি হচ্ছে। এটুকু শুনেই ডাক্তারবাবু টিকিটে ওষুধের নাম লিখে ধরিয়ে দিলেন। আমি ফোড়া দেখাতে চাইলে তিনি বলেন, দরকার নেই। তাড়াতাড়ি  যাও, আরও লোক আছে। আমার প্রশ্ন, ডাক্তার যদি ঠিকমতো নাই দেখেন তাহলে কী করে  বুঝবেন রোগটা কী?

    এই পরিস্থিতিতে গ্রামগঞ্জ ও শহরের দুঃস্থরা এই হয়রানির কথা শুনে পাড়ার হোমিওপ্যাথি ও হাতুড়েদের কাছে নাম লেখাচ্ছেন। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া পোড়াঝার, মিলন মোড়, বাড়িভাসা, সাহুডাঙ্গির  মতো বিভিন্ন আধা শহুরে এলাকায় হোমিওপ্যাথি ও হাতুড়েদের চেম্বারে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। এদিন বাড়িভাসার এক হাতুড়ে বলেন, আমরা আরএমপি রেজিস্ট্রেশনে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখছি। এক সপ্তাহে রোগী বেশি হচ্ছে।

    পাড়ার হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের চেম্বারের সামনেও দেখা যাচ্ছে রোগীর ভিড়। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, আমরা সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছি জ্বর হলে সরকারি হাসপাতালে যেতে। গরীব মানুষ সরকারি হাসপাতাল বিমুখ হতে থাকলে সময়মতো ডেঙ্গু সংক্রমণ নির্ণয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

    এই ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, সিনিয়র ডাক্তার ও সার্ভিস পিজিটি দিয়ে প্রতিটি আউটডোর চলছে। ছুটির আবহ থাকলে কোনও কোনও দিন আউটডোরে রোগীর সংখ্যা কম হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)