• হলদিয়া, মেদিনীপুরের শ্রমিকদের ছাত্র সাজিয়ে নবান্ন অভিযানের চেষ্টা
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: তাঁদের কেউ দিনমজুর, কেউ হকারির কাজ করেন। আবার কেউবা করেন চাষবাস। আদতেও ছাত্র নন এঁদের কেউই। মঙ্গলবার ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযানে সাঁতরাগাছি এলাকায় আন্দোলনে দেখা গেল যাঁদের, তাঁরা হলদিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আসা হকার কিংবা চাষি। পুলিসের দিকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার পর আটক হওয়ার সময় নিজেকে ‘ছাত্র’ বলে দাবি করার দুঃসাহস দেখাননি কেউ। 

    এদিন সকাল সকাল হলদিয়া লোকালে চেপে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিলেন সাঁতরাগাছি স্টেশনে। জাতীয় পতাকা হাতে বাইরে এসে ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁদের। ‘কোথা থেকে এসেছেন’? প্রশ্নের জবাবে প্রত্যেকেই বলেন, ‘আমরা হলদিয়া থেকে এসেছি। পরে আরও অনেকে আসবে। আমরা ছাত্র নই ঠিকই। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এই আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছি।’ জানা গেল, প্রত্যেকেই দিনমজুরের কাজ করেন। বেলা বাড়তেই সাঁতরাগাছি স্টেশনের সামনে আরও ভিড় জমতে শুরু করে। কিন্তু সেই ভিড়ে থাকা অধিকাংশ লোকও ছিলেন হলদিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আসা। মেচেদা ও পাঁশকুড়া লোকালে চেপে সাঁতরাগাছি স্টেশনে নেমে আরও প্রায় ২০০ জন বিক্ষোভকারী ব্যারিকেডের সামনে জমায়েত হন। দুপুর একটা নাগাদ পুলিসকে লক্ষ্য করে তাঁরা ইট ও পাথর ছুড়তে শুরু করলে ঘটনাস্থল থেকে একে একে ১৭ জনকে আটক করে ভ্যানে তোলে পুলিস।

    আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে প্রদীপ ঘোরাই নামের এক যুবক নিজেকে বেসরকারি সংস্থার কর্মী বলে দাবি করেন। কোন সংস্থায় তিনি কাজ করেন, জানতে চাইলে উত্তর দিতে পারেননি। এরপর কার্যত আমতা আমতা করে তিনি বলেন, ‘আসলে আমি কাঠমিস্ত্রির কাজ করি। অভিযানে শামিল হতে ট্রেনে করে এসেছি।’ শুধু প্রদীপই নন, বিভিন্ন শ্রম ও পেশার সঙ্গে যুক্ত সাধারণ মানুষকে দিয়েই এদিন ‘ছাত্রদের’ নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি সম্পন্ন করার চেষ্টা হয়। বিকেলের দিকে সাঁতরাগাছি স্টেশনে ভিড় ছিল। তবে বিকেল হতেই বদলে যায় ভুয়ো ছাত্রদের স্লোগান। বিজেপির সুরেই তাঁরা আওয়াজ তুললেন ‘বাংলা বন্‌ধ জিন্দাবাদ’। 
  • Link to this news (বর্তমান)