• ‘যেতে দিন প্লিজ’-আর্জি হেস্টিংস মোড়ে আটকে থাকা অন্তঃসত্ত্বা সেনা অফিসারের, কানই দিলেন না সার্জেন্ট
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: টার্ক ভিউ কোয়ার্টার থেকে গাড়ি নিয়ে বেরলেন সেনা বাহিনীর এক মহিলা আধিকারিক। উর্দি পরে রয়েছেন। নবান্ন অভিযানের কারণে টার্ক ভিউ রোড তখন অবরুদ্ধ। সেনা আদিকারিক দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকে বাধ্য হয়ে নামলেন গাড়ির চালকের আসন থেকে। খালি চোখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। সেখানে কর্তব্যরত অমিত নামে কলকাতা পুলিসের সার্জেন্ট। মহিলা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, কীভাবে বেরবেন। অভিযোগ, তাঁর কথা কার্যত কানেই তুললেন না অমিতবাবু। তারপরও গর্ভবতী মহিলা সাহয্যের আর্তি জানালেন। কিন্তু বেরতে পারলেন না। তারপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদপত্রের কয়েকজন কর্মীর সহযোগিতায় মহিলা বেরতে পারলেন। মঙ্গলবার ঘটনাটি দেখে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রসঙ্গত সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে লালবাজারের আধিকারিকরা বলেছিলেন, নবান্ন অভিযানের জেরে কোনও সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়লে পুলিসকে জানালেই সাহায্য পাওয়া যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার বাস্তবে পুলিসের কোনও সাহায্যই পেলেন না এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। 

    ঘটনাক্রম অনুযায়ী, টার্ক ভিউ রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর অসুস্থ বোধ করতে থাকেন ওই মহিলা সেনা আধিকারিক। কোনওরকমে গাড়ি থেকে নেমে আসেন। সার্জেন্টের কাছে গিয়ে সাহায্য চান। কিন্তু অনেক্ষণ নিশ্চুপ থাকার পর সার্জেন্ট অমিতবাবু সিভিক ভলান্টিয়ারদের ডাকাডাকি শুরু করেন। তাঁদের হেস্টিংস মোড়ের কাছেই আর্মি অফিসারদের কোয়ার্টারে মহিলাকে ছেড়ে দিয়ে আসার নির্দেশ দেন। হেস্টিংস থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার বলেন ‘স্যর, আমার এখানে আইনশৃঙ্খলার ডিউটি রয়েছে। এখন তো যেতে পারব না।’ সিভিকের উচ্চতর আধিকারিকও চলে আসেন ঘটনাস্থলে। তিনিও সিভিককে যেতে বাধা দেন। ফলে দাঁড়িয়েই থাকতে হয় গর্ভবতী ওই সেনা আধিকারিককে। তারপর মহিলাকে সাহায্য করার জন্য পথচলতি কয়েকজন স্থানীয়কে অনুরোধ করেন হেস্টিংস মোড়ের দায়িত্বে থাকা ওই পুলিস সার্জেন্ট। কিন্তু নিজে কোনও উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ। স্থানীয়রাও নানা অজুহাতে সাহায্য করতে অস্বীকার করেন। টানাপোড়েনের ফলে মহিলা ততক্ষণে আরও অসুস্থ বোধ করছেন।

    সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের কয়েকজন কর্মী এগিয়ে আসেন গর্ভবতী মহিলাকে সাহায্যের জন্য। তখনও কার্যত দাঁড়িয়ে দর্শক পুলিস। পরে জানা গিয়েছে, ওই সার্জেন্ট পিসিআর ভ্যানের দায়িত্বে ছিলেন। লালবাজারের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি এক গর্ভবতী সেনা অফিসারের সাহায্যে কোনও পদক্ষেপ নিলেন না? সেই উত্তর জানা যায়নি। এক সাংবাদিক মহিলাকে গাড়ি চালাতে দেননি। নিজে গাড়ি চালিয়ে সেনা আধিকারিককে পৌঁছে দেন চ্যাপেলে আর্মি অফিসার্স কোয়ার্টারে।
  • Link to this news (বর্তমান)