• ইট বৃষ্টি, অভিযানের নামে তাণ্ডব ফোরশোর রোড, হাওড়া ময়দানে, জখম দুই অফিসার সহ ৪ পুলিসকর্মী
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বেলা ১টা বাজতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় নবান্নমুখী হাওড়ার বিভিন্ন রাস্তা। নবান্ন অভিযানের নামে কার্যত তাণ্ডব চলে রামকৃষ্ণপুর ঘাট সংলগ্ন ফোরশোর রোড থেকে শুরু করে হাওড়া ময়দান চত্বরে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের পাশাপাশি পুলিসকে টার্গেট করে চলে ইট বৃষ্টি। মঙ্গলবার এভাবেই ‘শান্তিপূর্ণ’ অভিযান করল ছাত্র সমাজ তথা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। ফোরশোর রোডে পুলিসের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খণ্ডযুদ্ধ চলে প্রায় তিন ঘণ্টা। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিস শুধু জল কামান, টিয়ার গ্যাসের উপর ভরসা রাখলেও, মাঝেমধ্যেই আন্দোলনকারীদের দিক থেকে পুলিসকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি হয়। এই সময় হাওড়া ময়দানে হঠাৎই পুলিসের উপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। এলোপাথারি ইট ছোড়ে তারা। গুরুতর আহত হন আইজি ট্রাফিক ডি পি সিং, চণ্ডীতলার আইসি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় সহ চারজন পুলিসকর্মী। 

    এদিন সকাল থেকেই হাওড়ায় নবান্নমুখী সমস্ত রাস্তা মুড়ে ফেলা হয় নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। রামকৃষ্ণপুর ঘাটের কাছে ফোরশোর রোডে প্রায় আট ফুট উঁচু ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিস। যাতে মাছিও গলতে না পারে। একইভাবে ঘিরে দেওয়া হয় হাওড়া ময়দান চত্বর। তবে গণ্ডগোলের সূত্রপাত ফোরশোর রোডে। হাওড়া স্টেশন থেকে একদল আন্দোলনকারী এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রামকৃষ্ণপুর ঘাটে। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা ওই ব্যারিকেড ভেঙে দেন। তবে আন্দোলনকারীদের পরের ব্যারিকেড ভাঙতে সময় লাগে ঘণ্টাখানেক। জল কামানের জন্য তাঁরা ছত্রভঙ্গ হলেও জলের তোড় কমলেই ফের জড়ো হয়েছেন ব্যারিকেডের সামনে। বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ চালান আন্দোলনকারীরা। এরই মাঝে ফোরশোর রোড সংলগ্ন একটি সাজানো পার্কের তালা ভেঙে ভাঙচুর চালাতে দেখা যায় একদল দুষ্কৃতীকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি উঁঠিয়ে আন্দোলনকারীদের তাড়া করে র‍্যাফ। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় শুয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিছুক্ষণ বাদে পুলিস ফের লাঠি নিয়ে তেড়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শেষমেশ সরকারি বাসের ডিপোর সামনে গিয়ে রাস্তায় বসে স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল ৪টে নাগাদ পুলিসের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।

    অন্যদিকে, হাওড়া ময়দান এলাকায় দুপুর দেড়টা নাগাদ পুলিসকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে উত্তেজিত ‘ছাত্র’রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখানেও লাঠি নিয়ে তাড়া করে পুলিস। সকাল থেকে মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও বিকেল ৪টে ১০ মিনিট নাগাদ আন্দোলনকারীদের একাংশ হঠাৎ হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিস শেষমেশ চ্যাংদোলা করে হটিয়ে দেয় তাঁদের। ভিড় সরে গেলে ফের মেট্রো স্টেশন ঢুকতে পারেন সাধারণ মানুষ।
  • Link to this news (বর্তমান)