• আন্দোলনকারী থেকে সাধারণ যাত্রী, ভরসা মেট্রোতেই
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আন্দোলনকারী থেকে আম জনতা, নবান্ন অভিযানের এপিসেন্টারে পৌঁছতে বা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে মূল ভরসা ছিল মেট্রো। শহরের পাঁচটি চালু রুটের মধ্যে এদিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান করিডর। কারণ, রাজ্য সবিচালয় নবান্নে পৌঁছতে শহর ও শহরতলির বহু আন্দোলনকারী হাওড়া কিংবা হাওড়া ময়দান পৌঁছন মেট্রো চেপে। রেলের পরিসংখ্যান বলছে, এদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গঙ্গার তলায় এই মেট্রো পরিষেবা নিয়েছেন ৪৭ হাজারের বেশি যাত্রী। যেখানে গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২০ আগস্ট এই রুটে ওই সময়ে যাত্রী সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার। সবমিলিয়ে গত সপ্তাহের তুলনায় এদিন বাড়তি ১৯ হাজার যাত্রী চলাচল করেছে এই রুটে। যার অধিকাংশই হাওড়া কিংবা হাওড়া ময়দান স্টেশনে নিজেদের যাত্রা শুরু কিংবা শেষ করেছেন।

    চলতি বছরের ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই মেট্রো রুটের উদ্বোধন করেছিলেন। ১৫ মার্চ থেকে সংশ্লিষ্ট লাইনে যাত্রী পরিষেবা শুরু হয়। তারপর থেকে এই রুটটি মূলত ‘জয় রাইড’ হিসেবেই যাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ, গঙ্গার ২৮ মিটার নীচ দিয়ে মেট্রো সফর

    উপভোগ করার জন্যই গত কয়েকমাস যাত্রীদের পরিচিত ভিড় দেখেছে এই রুট। প্রায় পাঁচ মাস পর এদিন আস্ত একটা আন্দোলনের আবহে এই করিডরের বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হল। এমনটাই দাবি মেট্রো রেল কর্তাদের। 

    প্রসঙ্গত, হাঙ্গামার আশঙ্কায় এদিন সকাল ১০টা থেকেই হাওড়া ব্রিজ বন্ধ করে দেয় পুলিস প্রশাসন। যার জেরে বাস-মিনিবাস-ট্যাক্সি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী হাওড়া স্টেশনে পরপর লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন আসতে শুরু করে। বহু যাত্রী ‘ছাত্র সমাজের’ এই আন্দোলন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। স্বভাবতই লাগেজ ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্টেশন থেকে বেরতেই কার্যত অসহায় বোধ করেন তাঁরা। পুলিস ও স্থানীয়দের পরামর্শে হাওড়া স্টেশনের ভিতর থেকেই মেট্রো প্ল্যাটফর্মে ঢুকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। অন্যদিকে, উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির বহু আন্দোলনকারী এদিন নর্থ-সাউথ মেট্রো রুট ধরে এসপ্ল্যানেডে নামেন। তারপর এক ছাদের তলাতেই রুট বদলে এসপ্ল্যানেড থেকেই হাওড়া ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করেন। অন্যদিকে, সল্টলেক ও সংলগ্ন এলাকার বহু মানুষ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রুটে মেট্রো চেপে শিয়ালদহ স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে হাঁটা পথে কলেজ স্কোয়ারের জমায়েতে যোগ দেন। সবমিলিয়ে শহরের লাইফ লাইন এদিন আক্ষরিক অর্থেই সড়কপথের বাধাকে উপেক্ষা করে অক্সিজেন জোগাল জনতাকে।   
  • Link to this news (বর্তমান)