• অভিযান নামেই! সাঁতরাগাছিতে বিক্ষিপ্ত ভিড় থমকে ব্যারিকেডে
    বর্তমান | ২৮ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজেপির নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল সাঁতরাগাছি রেল স্টেশন সংলগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। সেবার হিমশিম খেতে হয়েছিল পুলিসকে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে শান্তিপূর্ণভাবে আটকাতে আগেভাগেই সাঁতরাগাছিতে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিল পুলিস। এদিন সকাল থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল সাঁতরাগাছি গ্যারাজ মোড় এলাকা। কিন্তু সংঘবদ্ধ অভিযানের চেনা ভিড় সেভাবে দেখা গেল কই? দফায় দফায় লোক নিয়ে এসে কার্যত অগোছালোভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুরের পর আন্দোলনকারীদের সাঁতরাগাছি ব্রিজের পর আর এগতে দেয়নি পুলিস।

    দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে যাওয়ার রাস্তায় এদিন ভোর থেকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল পুলিস। আশঙ্কা ছিল, সাঁতরাগাছির দিক থেকে বড় সংখ্যায় বিক্ষোভকারীরা নবান্নের দিকে অগ্রসর হতে পারে। সেকারণে বেলেপোলে গার্ড রেল ও সাঁতরাগাছি ব্রিজের উপরে বড় বড় দু’টি ট্রলার রেখে রাস্তা আটকে দিয়েছিল পুলিস। সাঁতরাগাছি স্টেশনের প্রায় ১০০ মিটার আগে গ্যারেজ মোড় এলাকায় রীতিমতো রাস্তা খুঁড়ে তৈরি করা হয়েছিল বিশাল ব্যারিকেড। শুধু সাঁতরাগাছি পয়েন্টেই সকাল থেকে মোতায়েন ছিল প্রায় ৬০০ পুলিস। পাশাপাশি ছিল দু’টি জলকামান, র‍্যাফ, কাঁদানে গ্যাসের সেল। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দু’টি লেনই ব্যারিকেড দিয়ে সম্পূর্ণ সিল করে দেওয়া হয়। ফলে থমকে যায় ছোট গাড়িও। সেই সময় ব্যারিকেডের ওপারে মেরেকেটে ৩০ জনের জমায়েত ছিল। বেলা গড়াতে ভিড় খানিকটা বাড়লেও তা চোখে পড়ার মতো ছিল না।

    বেলা পৌনে ১টা নাগাদ প্রায় ১৫০ জনের জমায়েত গার্ড রেলের দিকে বিক্ষিপ্তভাবে এগতে শুরু করে। পুলিসের তরফে বারবার তাঁদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালাতে আবেদন করলেও কর্ণপাত করেননি কেউ। দুপুর ১টা নাগাদ নবান্নমুখী লেনে ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে এগতে চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে বিশাল পুলিস বাহিনী তাঁদের সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের সামনের অংশের দিকে ঠেলে দেয়। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হতেই বিক্ষোভকারীরা আচমকা ইটের টুকরো ও রেল লাইনের পাথর ছুড়তে শুরু করে। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফাটে দুই পুলিসকর্মীর। অল্পবিস্তর জখম হন আরও তিনজন। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় ১৭ জনকে। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। দুপুরের পর প্রায় তিনশো আন্দোলনকারী সাঁতরাগাছি স্টেশনের সামনে রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে ওই ভিড় হটিয়ে দিতে সক্ষম হয় পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)