রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইডি গ্রেফতার করেছিল বনগাঁর তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালত তাঁকে জামিনে মুক্ত দিয়েছে। সে খবর বনগাঁ শহরে পৌঁছতেই তাঁর অনুগামীরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। শহর জুড়ে বাজি ফাটাতে থাকেন। মুষ্টিমুখ করানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় শঙ্করকে নিয়ে আবেগপূর্ণ পোস্ট করছেন অনেকে।
২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত শঙ্কর বনগাঁর পুরপ্রধান ছিলেন। তারপরেও কিছু দিন পুর প্রশাসকের দায়িত্ব সামলেছেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বনগাঁ শহরে দলের ভাল ফল না হওয়ায় শঙ্করকে পুর প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গত পুরসভা ভোটে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। যদিও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে বর্তমানে পুরসভার উপ পুরপ্রধান।
জনপ্রতিনিধি না থাকলেও বনগাঁ শহরে শঙ্করের নিজস্ব জনসমর্থন বরাবরই ছিল, বা এখনও আছে। মঙ্গলবার জামিন পাওয়ার পরে তাঁর অনুগামীদের উচ্ছ্বাস সে কথাই জানান দিচ্ছে।
এ দিন দুপুরে শহরে হঠাৎ বাজি ফাটতে থাকায় অনেকেই বুঝতে পারেননি, তার কারণ কী। অনেকে ভেবেছিলেন, নবান্ন অভিযানের সমর্থনে মানুষ বাজি ফাটাচ্ছেন। পরে বোঝা যায়, শঙ্করের অনুগামীরা বাজি ফাটাচ্ছেন।
দলের একাংশ জানাচ্ছে, গ্রেফতার হলেও তৃণমূল নেতৃত্ব শঙ্করের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি। গ্রেফতার হওয়ার আগে শঙ্কর ছিলেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক। এখনও ওই পদেই আছেন।
দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম, লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে শঙ্করকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। উনি জামিন পাওয়ায় আমরা খুশি। আইনের প্রতি ভরসা আছে।’’
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি শঙ্করের জামিন পাওয়া নিয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছে। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না। আইনের উপরে আমাদের ভরসা আছে।’’ সিপিএমের বনগাঁ শহর এরিয়া কমিটির সদস্য পীযূষকান্তি সাহা বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’