ভরা দামোদরে ফের জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়াল দুর্গাপুর ব্যারাজ
এই সময় | ২৮ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, দুর্গাপুর ও আসানসোল: দিন তিনেকের নিয়ন্ত্রণের পরে ফের জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়াল ডিভিসি। পাল্লা দিয়ে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজও। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর থেকে ৬৩ হাজার ৫৭০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেচ দপ্তর।রাজ্য সেচ দপ্তরের দুর্গাপুর শাখার চিফ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার বলেন, 'লাগাতার বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন নদী, নালার জল দামোদরে এসে মিশছে। অন্য দিকে, পাঞ্চেত ও মাইথন থেকেও জল আসছে। সেই জন্য দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আপাতত ৬৩ হাজার ৫৭০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। গভীর রাতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে।'
গত সোমবার মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৩৪ হাজার কিউসেক হারে জল ছেড়েছিল ডিভিসি। মঙ্গলবার সেই পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে মোট ৪৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে বলে দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেটরি কমিশন (ডিভিআরআরসি) সূত্রে জানা গিয়েছে।
ডিভিসি জানিয়েছে, সোম থেকে মঙ্গলবার দুপুর ২টো পর্যন্ত আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ৪৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। ডিভিআরআরসি-র সদস্য সচিব শশী রাকেশ জানান, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকার এবং ডিভিসির সঙ্গে কথা বলে জল ছাড়ার পরিমাণ বাধ্য হয়ে কিছুটা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। মাইথনে সামান্য বাড়িয়ে ১৩ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, 'বরাকর ও দামোদর উপত্যকায় ৪৪ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। তেনুঘাটের সাতটি গেট খোলা রয়েছে। সেখান থেকেও কিছুটা জল এসে ঢুকছে পাঞ্চেতে। বাঁধের উচ্চতা ও রক্ষণাবেক্ষণের কথা মাথায় রেখে অঙ্ক কষে জল ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী কাল দামোদর এবং বরাকর উপত্যকায় যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে দুপুরের পর থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমানো হতে পারে।'
ডিভিসি-র এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল) আঞ্জনি দুবে জানান, এই মুহূর্তে মাইথনে ৪৭৮.৭৭ ফুট এবং পাঞ্চেতে ৪০৯ ফুট জল রয়েছে। এ দিকে, মাইথন, পাঞ্চেতের জল দুর্গাপুর ব্যারাজে এসে জমা হওয়ায় চাপ বেড়েছে সেখানেও। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ ব্যারাজ থেকে ৪১ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল।
কিন্তু, দুপুর ৩টে নাগাদ সেই পরিমাণ এক লাফে ২০ হাজার কিউসেক বাড়িয়ে ৬১ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়। ব্যারাজের একাধিক গেট খুলে রাখা হয়েছে। ৫ দিন দিন আগে ব্যারাজ থেকে একবার ৬২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। তার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে গড়ে ৪০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে।
কিন্তু, ফের জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানোয় হুগলির আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও বাঁকুড়ার বড়জোড়া, সোনামুখীর মতো এলাকাগুলোর একাংশ প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। জল বাড়লে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।'