'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'-এর ডাকা 'নবান্ন অভিযান'-এ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। তাতে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। ইটের ঘায়ে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। বুধবার ফেসবুক পেজে এই তথ্য দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে তাঁর কর্নিয়া এবং রেটিনা গুরুতর জখম হয়।‘নবান্ন অভিযান’-কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় কলকাতা, হাওড়ায়। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে আন্দোলনকারীদের। পুলিশের দাবি, নবান্ন অভিযান কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি পুলিশ। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড করা হয়েছিল। কিছু কিছু জায়গায় জল কামান ব্যবহার করা হয়। কাঁদানো গ্যাসের সেলও ফাটায় পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে নিক্ষেপ করে ইট ছোড়েন আন্দোলনকারীরা। সেই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল ধর্মতলা, হাওড়াতে।
বুধবার কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে জানানো হয়, আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইট লাগে সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখে। কলকাতা পুলিশ ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, 'দেবাশিস চক্রবর্তী ফোর্সে যোগ দেন ২০১৫ সালে। গতকাল নবান্ন অভিযানের জন্য রাস্তায় ডিউটি করছিলেন। আচমকাই চোখে এসে লাগে ইট। সেই আঘাতে জখম হয় তাঁর কর্নিয়া এবং রেটিনা। ফলে তিনি সারাজীবনের মতো দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন কিনা, তা জানা যাবে আরও এক সপ্তাহ পরে।'
শুধু দেবাশিস চক্রবর্তী নন, আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মীর রক্তাক্ত ছবিও এ দিন শেয়ার করা হয়। শুধু দেবাশিস চক্রবর্তী নন, আরও অনেক পুলিশকর্মী আন্দোলনকারীদের হাতে গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি কলকাতা পুলিশের।
দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, 'গতকাল আমি ফারলং গেটের কাছে ডিউটিতে ছিলাম। আমাদের নির্দেশ আসে স্ট্যান্ড রোডের দিকে যাওয়ার জন্য। সেই দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় ইডেন গার্ডেনের আন্দোলনকারীরা ইঁট ছুড়তে থাকে। একটি ইঁট বাঁ চোখে লাগে। অঝোরে রক্ত ঝরতে থাকে আমার চোখ থেকে।' আপাতত তিনি চিকিৎসাধীন। বাম চোখে ভালো দেখতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
পুলিশের তরফে পোস্টে আরও বলা হয়েছে, 'গত দুই সপ্তাহে অজস্র প্রকৃত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং জমায়েত দেখেছে এই শহর। একটি বাদে আর কোথাও কোনওরকম হিংসার ঘটনা ঘটেনি। উল্টে আন্দোলনকারীদের সবরকম সুবিধা করে দেওয়ায় চেষ্টা হয়েছে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে। গতকালের আন্দোলনকারীদের ইচ্ছাকৃত হিংসার ফলে দেবাশিস হয়তো হারাতে বসেছেন তাঁর দৃষ্টিশক্তি। তবে তিনি বা আমাদের অন্যান্য সহকর্মী কোনরকম করুণা বা সহানুভূতি চান না কারুর কাছে। আমরা জানি, এ আমাদের কাজেরই অঙ্গ। এই পোস্টের উদ্দেশ্য, মানুষের বোধশক্তি জাগিয়ে তোলা, যাতে বিভ্রান্তিকর তথ্যের জালে জড়িয়ে না পড়েন, তা নিশ্চিত করা।'
বুধবার রেড রোডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন অভিযানে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, 'পুলিশ সংযমের পরিচয় দিয়েছে।'