'ফোঁস' থেকে ‘পোস্ট’- নেতা-কর্মীদের পরে মন্ত্রীদের ‘টাস্ক’ মমতার, RG করের প্রভাব?
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ আগস্ট ২০২৪
নেতা-কর্মীদের ‘ফোঁস’ করতে হবে। সক্রিয় থাকতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মন্ত্রীদেরও নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় করতে হবে ‘পোস্ট’। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বুধবার দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে ‘টাস্ক’ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরে রামকৃষ্ণদেবের প্রসঙ্গ টেনে এনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে নেতা-কর্মীদের ‘ফোঁস’ করতে বলেন। সেইসঙ্গে দলের সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক কাউন্সিলর, সভাপতিদের সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। আর পরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদেরও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেন বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, মমতা সাফ জানিয়েছেন যে তিনি এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যে পোস্ট করেন, সেগুলি শেয়ার করতে হবে মন্ত্রীদেরও। জোরদারভাবে তৃণমূলের অবস্থান, সরকারের কাজের বিষয়ে প্রচার করতে হবে বলে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ করার দরকার , সেটা আপনারা ভালো বুঝে করবেন। আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার, চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাঁকে আপনি কামড়াবেন না। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামিদিনে আপনাদের কাজ হচ্ছে, চক্রান্তকারীদের মুখোশ খুলে দিয়ে ফোঁস করতে শিখুন। ফোঁস করতে শিখুন। ফাঁস করে দিন।’
সেইসঙ্গে সর্বস্তরের তৃণমূল নেতা-কর্মীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গা-ঝাড়া দিয়ে উঠতে বলেন মমতা। তিনি প্রশ্ন করেন যে কেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অতটা সক্রিয় নন? দলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হচ্ছে। প্রত্যেক নেতা-কর্মীকেও সেই কাজটা করতে হবে।
আর কেন সেই নির্দেশ দিচ্ছেন, সেটাও ব্যাখ্যা করে দেন মমতা। তিনি জানান, এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে অনেক ভুয়ো ভিডিয়ো এবং অডিয়ো বানানো হচ্ছে। তারপর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যতদিনে সেটা ভুয়ো বলে বলা হচ্ছে, ততদিনে আগুন ছড়িয়ে যাচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে ভুয়ো ভিডিয়ো রুখতে একসঙ্গে লড়াই করারও বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল সরকার। রাজনৈতিক দলকে ছাপিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে রোষ তৈরি হয়েছে। বিশেষত যে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছিল, তিনি ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নয়া পদ পেয়ে যাওয়ায় আরও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে আমজনতার মধ্যে।
সেই ভাবমূর্তি মেরামতের পাশাপাশি আরজি কর কাণ্ডের আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একগুচ্ছ ভিডিয়ো এবং অডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। যেগুলির মধ্যে একাধিক ভুয়ো এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা বলে দাবি করা হয়। সেই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা যাতে নড়েচড়ে ওঠেন, সেজন্যই এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।