নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: রাস্তায় টোটোর সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। সঙ্গে বেড়েছে যানজট। অফিস টাইমে যানজট বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ঘটছে দুর্ঘটনাও। সেই কথা মাথায় রেখে এবার টোটোর জন্য বিশেষ রেজিস্ট্রেশনের পরিকল্পনা করল মেদিনীপুর পুরসভা। শহরের মধ্যে চলা প্রায় ৮ হাজার টোটোর রেজিস্ট্রেশন করা হবে। একইসঙ্গে সময়ের রোটেশন অনুযায়ী টোটো চালানোর নতুন নিয়ম চালু হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এর ফলে শহরে টোটোর সংখ্যা কমানো যাবে। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, টোটোর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ভাড়াও বেশি নেওয়া হয়। সেইদিকেও পুরসভার নজর দেওয়া উচিত।
এদিন মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, টোটোর জন্য বিশেষ রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এছাড়াও টোটো চলাচলে একগুচ্ছ নিয়ম আনা হচ্ছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য যানজটমুক্ত শহর গড়ে তোলা। আমরা টোটোর বিরুদ্ধে নই। তবে সাধারণ মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, বহু প্রাচীন এই শহরে অলিগলির সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে বাম আমলে অপরিকল্পিত ভাবে শহর বেড়ে ওঠায় ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। একদিকে সরু রাস্তার সংখ্যা অনেকটাই বেশি। সামনে দুর্গাপুজো। তাই পুজোর কথা মাথায় রেখে যানজট নির্মূল করাই প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরে সারা দিনে প্রায় ৮ হাজার টোটো যাতায়াত করে। তবে তার মধ্যে প্রায় ৩ হাজার টোটোর মালিক বা চালক শহরের। বাকি টোটো গ্রাম থেকে আসে। মূলত শালবনী, মেদিনীপুর সদর ব্লকের একাধিক গ্রাম থেকেও প্রচুর টোটো ঢোকে শহরে। পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেট মোড়, তাঁতিগেড়িয়া, বিদ্যাসাগর মোড়, গান্ধীর মোড়, বটতলা, স্কুল বাজার, বড় বাজার, জগন্নাথ মন্দির চক সহ একাধিক এলাকায় যানজট হয়। টোটোর ইঞ্জিনের নম্বর অনুযায়ী টোটোর রেজিস্ট্রেশন করানো হবে। খুব বেশি পুরোনো গাড়ি হলে, তা চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে না। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য টোটো চালকদের আইডেন্টিটি কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, সময়ের রোটেশন নিয়ম করা হচ্ছে। যেমন, কোনও টোটো সকালে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা চলল। সেই টোটো বিকেলের পর রাস্তায় বেরনোর আর অনুমতি পাবে না।
এদিন কথা হচ্ছিল টোটো চালক দেবাশিস মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন নম্বর হলে ভালোই হবে। একজন টোটো চালক কোনও দোষ করলে, সকলকে ভুগতে হয়। সেটা নিয়েও ভাবার প্রয়োজন আছে। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, টোটো জন্য খুব সমস্যা হয়। টোটো না কমালে যানজট কমবে না। পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি।