• উচ্চ শিক্ষার উপযোগী করতে রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে
    বর্তমান | ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্ৰাম বিশ্ববিদ্যালয় এখন সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ শিক্ষার পঠনপাঠনের উপযোগী করার লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ক্যাম্পাস চত্বরে তিনটি নতুন ভবন, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, স্টুডেন্ট অ্যাক্টিভিটি কেন্দ্র ও ইলেক্ট্রিক সাবস্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়ে হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হয়েছে ৯০ কোটি টাকা। প্রান্তিক এলাকার পড়ুয়ারা এবার জেলাতেই উচ্চমানের শিক্ষার সুযোগ সুবিধা পাবেন।

    ঝাড়গ্ৰাম শহর থেকে ১১ কিমি দূরে বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। আধুনিকমানের পঠনপাঠনের উপযোগী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাঁওতালি ভাষা সংস্কৃতি চর্চার প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সাধু রামচাঁদ মুর্মুর সাহিত্যকর্ম বাংলা ও অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করার কাজ শুরু হয়েছে। ‘ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের সঙ্গে যৌথভাবে অনুবাদের কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কলেজ ও  বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে অনুবাদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন, ইলেকট্রিক সাবস্টেশন ইত্যাদি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ ভবনের কাজ শেষ। বয়েজ হস্টেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। অ্যাকাডেমিক ভবনের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। জেলা পূর্তদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃত্যুঞ্জয় পাল বলেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই নির্মাণ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। বৃহৎ এই প্রকল্পের  কাজে ৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। 

    বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কল্লোল পাল বলেন, ঝাড়গ্ৰাম বিশ্ববিদ্যালয় সাঁওতাল সাহিত্যের মহান কবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ভবন কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। বয়েজ হস্টেলের কাজ চলছে। অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজের অনুমোদন কলেজের তরফে সদ্য দেওয়া হয়েছে। সাঁওতালি ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সাঁওতালি ভাষায় মাস্টার ডিগ্রির পঠনপাঠন হচ্ছে। সাঁওতালি নৃত্যের ডিপ্লোমা কোর্স আছে। জেলার পড়ুয়ারা সাঁওতালি ভাষায় উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়াও সাধু রামচাঁদ মুর্মুর সাহিত্যকর্ম নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। আধুনিক মানের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সুবিধা জেলার  প্রান্তিক এলাকার ছেলেমেয়েরা এখানে পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, উচ্চ শিক্ষার জন্য জেলার পড়ুয়াদের বড় একটি অংশ এতদিন কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী জেলায় চলে যেত। 

    আধুনিক মানের পঠনপাঠনের পরিকাঠামোয় খামতি ছিল। রাজ্য সরকার সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আধুনিক মানের পঠনপাঠনের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগে জেলার ছেলেমেয়েদের আর বাইরে যেতে হবে না। 

    ঝাড়গ্ৰাম শহরের বাসিন্দা শিল্পী সুবীর বিশ্বাস বলেন, এই জেলার বাসিন্দাদের সমৃদ্ধময় ভাষা, সংস্কৃতির ইতিহাস আছে। বৃহত্তর জগতে এতদিন ধরে যা উপেক্ষিত রয়ে গিয়েছে। দেরিতে হলেও ঝাড়গ্ৰাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এই মহান কবির নামে নামাঙ্কিত হয়েছে। রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা সাধুবাদযোগ্য।
  • Link to this news (বর্তমান)