সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: একবছরের মধ্যে খুনের ঘটনার মামলার শুনানি শেষ করে অভিযুক্তকে ফাঁসির আদেশ শোনাল জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। ঘটনায় অভিযুক্ত নিরঞ্জন মণ্ডলকে এই সাজা দিয়েছেন জেলা আদালতের অ্যাডিশনাল ফোর্থ কোর্টের বিচারক রিন্টু শূর। পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির শিশুকন্যা এবং স্ত্রীকে চারলক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের এই রায়ে খুশি মৃত স্বপন বর্মনের পরিবার। কেবল তাই নয়, দ্রুত মামলা শেষ করাতেও খুশি এই মামলা নিয়ে কাজ করা আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবছর জুন মাসের ৬ তারিখ শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেটের আশিঘরের পূর্ব চয়নপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। বুধবার আদালতে দাঁড়িয়ে মৃতের আত্মীয় অমিতকুমার দেবনাথ বলেন, স্বপন পেশায় মিস্ত্রি ছিলেন। অন্যদিকে, নিরঞ্জন একসময় স্বপনের সঙ্গে কাজ করত। কিন্তু, নিরঞ্জন অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার আগের দিন স্বপনের বাড়ি থেকে একটি রিকশ চুরি হয়। এনিয়ে নিরঞ্জনকে সন্দেহ করেন। পরদিন সকালে আশিঘর মোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন স্বপন। সেসময় ধারলো অস্ত্র দিয়ে স্বপনকে কোপ মারে নিরঞ্জন। এরপরেই আশিঘর পুলিস আউট পোস্ট নিরঞ্জনকে গ্রেপ্তার করে।
অমিতবাবু বলেন, রিকশ চুরির ঘটনায় নিরঞ্জনকে অভিযুক্ত করায় সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। অন্যদিকে, মামলার সহকারী সরকারি আইনজীবী প্রতীকলাল ঝাঁ চক্রবর্তী জানান, মৃত স্বপন বর্মনের বোন সরস্বতী দেবনাথের একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আশিঘর ফাঁড়ির পুলিস খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। ওই বছর জুলাই মাসের ২৫ তারিখে চার্জশিট জমা করে পুলিস। মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। যারমধ্যে পাঁচজন ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী। পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত ধারলো অস্ত্রটিও উদ্ধার হয়েছিল। তাতে লেগে থাকা রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সমস্ত কিছু দেখে বিচারক মঙ্গলবার নিরঞ্জন মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং এদিন ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন। অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী ভানুসিংহ সরকার জানান, এই রায়ের প্রেক্ষিতে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। - ফাইল চিত্র।